রাজশাহী: সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাজশাহীতে কঠোরতা শিথিল করেছে প্রশাসন। ঢিলেঢালা পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে নগরীজুড়ে। সড়কে গাড়ি চলাচল করেছে তুলনামূলক বেশি। যদিও জনশূন্যই ছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক। তবে রিকশাচালকদের সাথে ট্রাফিক পুলিশের দুর্ব্যবহার ও পথে পথে হয়রানির অভিযোগ ছিল আগের দিনের মতোই।
রবিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার চালু থাকায় কয়েকটি পয়েন্টে মানুষের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল। তবে মাস্ক ব্যবহার ছাড়া অন্য কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি কাউকেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রবিবার লকডাউনের পঞ্চম দিনেও জনশূণ্য ছিল রাজশাহী নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক। বন্ধই ছিল সকল বিপণী বিতান। তবে গত চারদিনের তুলনায় নগরীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে উল্লেখযোগ্য ক্রেতাসমাগম ছিল। সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে ভিড় করেই কেনাকাটা করেন তারা। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলে ক্রয়বিক্রয়। এ সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বাসায় ফিরে যান সাধারণ মানুষ। তবে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেয়ার শক্ত অভিযোগ ছিল ক্রেতাদের পক্ষ থেকে। পণ্যের দাম বেশি হলেও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ কিনে বাড়ি ফিরেছেন তারা।
এদিকে সড়কে রিকশা-অটোরিকশা চলাচল বেড়েছে। যদিও দ্বিগুণ বেশিবাড়া আদায়ের অভিযোগ ছিল। তবে পথে পথে পুলিশ বাধা দিয়ে চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিকশা চালকরা। তারা জানান, পেটের তাগিদে তারা বের হয়েছেন। কিন্ত পথে পথে পুলিশ তাদেরকে থামায়। বাজে ভাষায় কথা বলে রিকশার চাকার বাতাস বের করে দেয়। ফলে তারা যাত্রী পরিবহণ করা তো দূরের কথা, রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতেই পড়েন বিপাকে। রিকশা চালকদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর লক্ষিপুর এলাকায় মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সংলগ্ন এলাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের পরিবহন করে বিপদে উপকার করার ইচ্ছা নিয়ে রিকশা বের করেছিলেন। এতে কিছু টাকা উপার্জন হলে তাদের সংসার চালানো যেত। আসন্ন ঈদে কিনতে পারতেন নতুন পোশাক। কিন্ত লকডাউনে পুলিশ সেই পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। রিকশাচালকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে লকডাউন আরো শিথিল করার দাবি জানান।
তবে পুলিশ জানায়, কাউকে কোনো হয়রানি করা হয়নি। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তাদের দায়িত্ব তারা পালন করেছেন। সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে তারা কোনো কিছু করতে পারবেন না। জরুরী প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাশ নিয়ে বাইরে বের হতে বাধা নেই। তবে কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরতে হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, কাউকে তো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। করোনা মোকাবেলায় সবাইকে শুধু ঘরে থাকার আহবান জানানো হয়েছে। লকডাউন পুরোপুরি কার্যকরের লক্ষ্যেই রিকশাচালক ও জনসাধারণকে বাইরে বের হতে নিরুৎসাহিত করার অংশ হিসেবেই পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
আগামীনিউজ/নাহিদ