বরিশালঃ দর্শকের অভাবে বন্ধের পথে বিভাগের একমাত্র প্রেক্ষাগৃহ অভিরুচি।
বরিশালে এক সময় ১৮টি সিনেমা হল ছিলো। মালিকদের ব্যবসা ছিল রমরমা। তবে এখন পরিস্থিতি পুরোটাই উল্টো। বর্তমানে খরায় ভুগছে হলগুলো।
ইতোমধ্যেই ১৭টি হল বন্ধ হয়ে গেছে দর্শকের অভাবে। বরিশালের একমাত্র অভিরুচি হলটিও যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ঈদ ছাড়া অন্য সময় হলটিতে দর্শক হয় না বললেই চলে। তবে, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে এই অবস্থা আরো শোচনীয়।
বরিশালের নগরীসহ ১০ উপজেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া হলের মধ্যে রয়েছে, নগরীর কাকলী, বিউটি ও সোনালি। বাকেরগঞ্জের রংধনু, সঙ্গীতা, ঘোমটা। বাবুগঞ্জের আনারকলি। উজিরপুরের স্বপ্নপুরী। মেহেন্দিগঞ্জের আজাদ, রাজলক্ষ্মী, মেঘনা, পদ্মা। বানারীপাড়ার সোহাগ। গৌরনদীর নাহার। আগৈলঝাড়ার তাজমহল। মুলাদীর মামুন এবং হিজলার রূপমহল সিনেমা হলগুলো।
দর্শকের অভাবে সিনেমাহলগুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে গড়ে উঠেছে শপিং মল, গোডাউন, বিজনেস সেন্টারসহ নানা রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
অভিরুচি হলের ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির বলেন, প্রথমদিকে হলটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছিলো এবং প্রতিদিন চারটি শো চলতো। দর্শকের ভিড় থাকতো দেখার মতো। ঈদ বা ছুটির দিনে হলে ১২শ আসনের সবগুলো পূর্ণ হয়ে যেতো। প্রায় ৪০ জনের বেশি কর্মাচারীর কর্মসংস্থান ছিলো হলটিতে। কিন্তু এখন কোনো কোনো শো-তে তিন-চারজনের বেশি দর্শক হয় না। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো হলটি বন্ধই হয়ে যাবে।
জেলা সহকারী তথ্য কর্মকর্তা লেনিন বালা জানান, মোট ১৮টি হলের মধ্যে ১৭টি বন্ধ হয়েছে। নগরীতে চারটি সিনেমা হলের মধ্যে তিনটিই এখন বন্ধ। শুধু অভিরুচি চালু রয়েছে।
হলের মালিক এবায়দুল হক চাঁন বলেন, ১৯৮৮ সালে চালুর পর থেকেই অভিরুচিতে ছিলো দর্শকের। সবগুলো আসন কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। বর্তমানে দর্শক খরার কারণে নগরীর তিনটি হল আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে অভিরুচি বন্ধ করতে হতে পারে। গত দুই-তিন বছর ধরে শুধু দুই ঈদ ছাড়া দর্শক হয়নি তেমন।
এর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, মানুষ ঘরে বসে টিভিতে ভারতীয় ছবি দেখছে। কিন্তু হলে তা দেখানো যাচ্ছে না। এ কারণে হলমুখি দর্শক কমছে। এছাড়া প্রযুক্তির প্রসার, কপিরাইট ও পাইরেসির কারণে চরম দর্শক শূন্যতায় পড়েছে সিনেমা হলটি।
আগামীনিউজ/জনী