উত্তরাঞ্চলঃ উত্তরাঞ্চলে পৌরসভা নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। রংপুর বিভাগের আট জেলার সাতটি পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচারণা জোরে শোরে চলছে। প্রায় ১৭ হাজার বেকার যুবক ও যুব মহিলা নির্বাচনকে ঘিরে খন্ডকালিন কর্মের সুযোগ পেয়েছে। নির্বাচনের কটাদিন তাদের হাতে টাকা আসায় ওইসব বেকার যুবক ও যুব মহিলারা ফুর ফরে মেজাজে দিন কাটাচ্ছে।
প্রার্থীর হয়ে যারা নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিচ্ছে তাদের কেউ মাইকে প্রচারনা চালাচ্ছে, কেউ আবার পোস্টার সাটছে, অনেকে হ্যান্ডবিল নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছে।
পৌর নির্বাচনের এমন কাজ করে প্রতিদিন তাদের মজুরি মিলছে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। বাড়ির খেয়ে এমন কাজ করে অনেকেই প্রাপ্ত মজুরীর পুরোটাই সঞ্চয় করছে। যাতে ভোটের পর ছোট খাট কাজে সঞ্চিত অর্থ কাজে লাগিয়ে স্থায়ী কিছু আয় করার সংকল্প মাথায় আটছে।
রংপুর বিভাগীয় নির্বাচন অফিসার সরকার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ১৬ জানুয়ারী নীলফামারীর সৈয়দপুর, গাইবান্দার সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্দা সদর, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, দিনাজপুরের বিরামপুর, বীরগঞ্জ ও দিনাজপুর পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই সাত পৌরসভায় মেয়র পদে ৩১ জন, ৭২টি ওয়ার্ডের সাধারন আসনে ৩৬৫ জন কাউন্সিলর ও ২৪টি সংরক্ষিত আসনে ১২১ জন মহিলা প্রার্থী ভোট যুদ্ধে নেমেছে। এ সাত পৌরসভার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা। এই পৌরসভায় ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৫টি। দিনাজপুর পৌরসভায় ওয়ার্ড সংখ্যা ১২টি, বিরামপুর, বীরগঞ্জ, নাগেশ্বরী, গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা মাত্র ৯টি করে। দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন হলেও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীক নেই। এর ফলে কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা কর্মী সংকট মোকাবেলায় বেকারদের কাজে লাগাতে বাধ্য হচ্ছে। অবশ্য মেয়র পদের প্রার্থীরাও দলীয় কর্মীর বাইরে প্রচারনার কাজে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ওইসব যুবক ও যুব মহিলাদের কাজে লাগাচ্ছে। এতে করে কাজের মান যেমন ভাল হচ্ছে তেমনি প্রচারনার কাজে প্রার্থীরা মানুষিক সন্তুষ্টি লাভ করছেন।
দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনে ০৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে মাইকে প্রাচারনা করছেন আউয়াল নামের এক যুবক। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করলে তার পারিশ্রমিক মিলে ৫০০ টাকা। সে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। করোনার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই অবসরে নির্বাচনী প্রচারনার কাজে অংশ নিয়ে কিছুটা হলেও আয় করার সুযোগ পেয়েছে। কথা হয় সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডে প্রচারনার কাজে অংশ নেয়া যুব মহিলা রায়হানা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাড়িতে বেকার বসে না থেকে দিন কয়েকের জন্য কাজ করলে তার ৬/৭ হাজার টাকা আয় হবে। যা দিয়ে একটি সেলাই মেশিন কিনে বাড়িতে কাজ করলে বাড়তি কিছু আয় করা সম্ভব।
একই ধরনের কথা বলেন, আব্বাসি, ওমর, ফারিয়া, মমতা, দিপালী, মুন্নী, আলপনাসহ অনেকেই। তাদের কথা কাজের বিনিময়ে খন্ডকালিন সময়েও আয় করতে পারলে তা সঞ্চয় করে ভবিষ্যতে ছোট হলেও কিছু কাজ করা সম্ভব। কথা হয় সৈয়দপুর পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আমিনুল হক, মেয়র প্রার্থী রবিউল আউয়াল রবি, বীরগঞ্জের আয়নাল হকের সঙ্গে। তারা বলেন, নির্বাচনের সময় নানা কাজে যুবকদের প্রয়োজন হয়। আর কিছু করলে তাদের পারিশ্রমিক দেয়া প্রয়োজন। এতে তাদেরও আয় হয়। আর আমাদের কাজ করতে সুবিধা লাগে। আর যুবক যুব মহিলারা নির্বাচনী কাজে অংশ নিলে নির্বাচনী আমেজ বৃদ্ধি পায় বলে তারা জানান।
আগামীনিউজ/নাসির