Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ধর্ষকদের পক্ষে নেই আইনজীবীরা


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০, ১২:৫০ পিএম
ধর্ষকদের পক্ষে নেই আইনজীবীরা

সংগৃহীত ছবি

সিলেটঃ এমসি (মুরারি চাঁদ) কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী নববধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ মামলার আসামি সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে সোমবার দুপুরে আদালতে নেয়া হয়। মামলার কার্যক্রমের শুরুতেই দেখা যায় এক অভাবনীয় দৃশ্য। আসামিপক্ষে নেই কোনো আইনজীবী। ধর্ষকদের পাশে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সিলেটের আইনজীবীরা। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছাড়াই শুরু হয় মামলার কার্যক্রম। সেখানে রিমান্ড শুনানি শেষে বিচারক তিন আসামির প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান। ধর্ষণে অন্য তিনজন জড়িত বলেও আদালতে দাবি করেন তিনি। গতকাল দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান এবং অন্য দুই আসামি অর্জুন ও রবিউলকে আদালতে হাজির করা হয়।

সিলেট মহানগর হাকিম দ্বিতীয় আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ নেননি। তবে বেশ কয়েকজন আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের সহযোগিতা করে শুনানিতে অংশ নেন।

শুনানিতে অংশ নেয়া একাধিক আইনজীবী জানান, আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত আসামিদের কাছে তাদের কোনো বক্তব্য আছে কী না জানতে চান। এ সময় সাইফুর রহমান নিজেকে নির্দোষ হিসেবে দাবি করেন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘রাজন, আইন উদ্দিন ও তারেক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি জড়িত ছিলাম না।’

গতকাল আলাদা সময়ে কড়া নিরাপত্তায় আসামিদের আদালতে আনা হয়। দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে আনা হয় সাইফুর ও অর্জুনকে। সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-২-এর বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে মামলার এ দুই আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি খোকন কুমার দত্ত।

এর আগে গতকাল দুপুর ১১টা ৫১ মিনিটে আসামিদের আদালতে আনা হয়। এরপর বেলা ৩টার দিকে একই আদালতে হাজির করা হয় অপর আসামি রবিউল ইসলামকে। তাকেও পাঁচ দিনের রিমান্ড দেন আদালত। আলোচিত এ মামলায় এই তিনজনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া আটক বাকি তিনজন মাহমুদুর রহমান রনি, অজ্ঞাত রাজন ও আইনুলকে র‍্যাব হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এর আগে গত রবিবার সকালে সাইফুরকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে পৃথক এক অভিযানে একই দিন সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা থেকে অর্জুন লস্করকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাই পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তাহমিদ মিয়ার ছেলে আর অর্জুন জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম গ্রামের কানু লস্করের ছেলে। এছাড়া রবিবার রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে আটক করে র‌্যাব আর নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আটক শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদর থানার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আর রবিউল ইসলাম (২৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানাধীন বড়নগদীপুর (জাগ দল) গ্রামের বাসিন্দা।

অন্যদিকে রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় রাজন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। এ সময় রাজনকে সহযোগিতায় করায় আইনুল নামের আরেক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রাজন তরুণীকে ধর্ষণ মামলার অজ্ঞাত আসামি ছিল বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণী নববধূকে দল বেঁধে ধর্ষণ করেন মহানগর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত ওই তরুণীর স্বামী। পরে রবিবার দুপুরে সিলেট মহানগর তৃতীয় আদালতের হাকিম শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার তরুণী।

আগামীনিউজ/আশা

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে