কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাড়ছে দুর্ভোগ, খাদ্য সংকটে পড়েছে বানভাসিরা। দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাদ্যেরও চরম সংকট। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছেন। বানভাসি মানুষের বেশির ভাগই উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উঁচু এলাকার বাড়ি-ঘরে আশ্রয় নিলেও অনেক বানভাসি পরিবার অতিকষ্টে ঘরের উঁচু মাচান ও নৌকায় বসবাস করছেন। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণ চায় বানভাসিরা। অনেক পরিবারের ঘরের খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং অনেক পরিবার রান্না করতে না পারায় একবেলা খেয়ে না খেয়েই দিন পার করছেন এসব পরিবার। অনেক বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ না পৌঁছানোর অভিযোগ বানভাসিদের।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার হাতিয়া, ধামশ্রেণি, বেগমগঞ্জ ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের পানিবন্দী মানুষের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘হামারগুলের খোঁজ কাইয়ো নেয় না। দিন আনি দিন খাই, কাজ কর্ম নাই তাই এলা হামরা না খায়া থাকি। তোমরাগুলে খালি হামার ছবি তোলেন, কই তার হামাক কাইয়ো খাবার দেয়। গরু ও বাছুরগুলেরেও কোন খাবার নাই। হামরা খুব কষ্ট করি আছি, তোমরাগুলে যদি হামার কথা লেখেন, তাইলে কি হামরা কিছু পামো।, এভাবেই খাবার চেয়ে এ প্রতিবেদককে কথাগুলো বলেছিল বানভাসিরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৭৭, ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে ১০১ ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৯৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের জানান, পানিবন্দী মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা পেয়েছি। প্রতিটি ইউনিয়নে বানভাসিদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানিয়েছেন, পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪০০ মে. টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আগামীনিউজ/জাহিদ/জেএফএস