ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে খরস্রত গড়াই নদীর ভাঙনে ৫টি গ্রামের কয়েক শত বসত বাড়ি ও ফসলি জমিসহ বিলীন হয়ে হচ্ছে মসজিদ। প্রতিরক্ষাবাঁধ না থাকায় নতুন করে নদী ভাঙন দেখা দেয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ। এ অবস্থায় গড়াই নদীর ভাঙন প্রতিরোধে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উপজেলার ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া গ্রামের ভাঙন কবলিতরা। শুক্রবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ইউনিয়নের বড়ুরিয়া গ্রামে এ মানববন্ধনে অংশ নেন শত শত গ্রামবাসী।
এ সময় তারা বলেন, নদীর হিংস্র থাবায় এ উপজেলার সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের নদীর পাড় ভিত্তিক গ্রামগুলোর শত শত বিঘার ফসলি জমি ও বাড়ির একাংশ হারিয়ে গেছে। নদীর করাল গ্রাসে হুমকির মুখে পড়েছে বড়ুরিয়া মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী বাজারসহ দুই-শতাধিক বসতি।
তারা আরও বলেন, দ্রুত নদীভাঙন ঠেকানো না গেলে গ্রামের শত শত পরিবার পথে বসবে। তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভাঙন প্রতিরোধে গুরুত্ব না দেয়ায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ পাচ্ছেন না।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প চেয়েে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু করা হবে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ছাড়া ভাঙন রোধ করা সম্ভব না।
উলেখ্য, কুষ্টিয়া থেকে ভাটিতে আসা গড়াই নদী ঝিনাইদহের শৈলকুপার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের লাঙ্গলবাধ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ১৯৯০ সালের পর থেকে বছরের পর বছর এ নদীর করাল গ্রাসে তিনটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার বসতভিটা ও ঘরবাড়ি ছেড়ে পথে বসেছে। সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের গড়াই নদীর তীরবর্তী বড়ুরিয়া, কৃঞ্চনগর, মাঝদিয়া, মাদলা ও লাঙ্গলবাধ বাজার গ্রামগুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রতিরক্ষাবাঁধ না থাকায় ইতোমধ্যে প্রায় ১৪শত বিঘা ফসলি জমি ও ১০০টি বাড়ির একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই নদীর এ ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর হিংস্র থাবায় যে কোন সময় গ্রামের আরও শত শত বিঘা ফসলি জমি ও ৩ শতাধিক বসত বাড়ি, মসজিদ ও লাঙ্গলবাঁধ বাজারবিরীন হয়ে যেতে পারে। প্রবল খরস্রত আর ভারী বর্ষণে নদীভাঙন আগ্রাসী রূপ নিয়েছে।
আগামীনিউজ/এম বুরহান উদ্দীন/এমজামান