Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মাদারীপুরে খাঁচায় মাছ চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে!


আগামী নিউজ | মো. জাকির হোসেন প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২০, ১১:৫৭ এএম
মাদারীপুরে খাঁচায় মাছ চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে!

মাদারীপুরে মাছ চাষে মুক্ত জলাশয়ের ধারণা পাল্টে দিচ্ছে এক শ্রেণির যুবক। এখন জলাশয়ে খাঁচায় করে মাছ চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন।

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বেশ কয়েকটি মৃতপ্রায় নদীতে দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে খাঁচায় করে মাছ চাষের এ পদ্ধতি। দিন যাচ্ছে আর বাড়ছে খাঁচার সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে চাষিও।

শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর বিলপদ্মা নদী, শিরুয়াইল ইউনিয়েনের আড়িয়াল খাঁ নদীসহ বিভিন্ন স্থানের উন্মুক্ত জলাশয়ে চলছে খাঁচায় করে মাছ চাষ। স্থানীয় বাজারে খাঁচায় চাষ করা মাছের চাহিদাও বেশ। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দিন দিন বেড়ে চলেছে চাহিদা।

অল্প জায়গায় খাঁচায় করে বেশি মাছ চাষ করা যায় এ পদ্ধতিতে। ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে এ মাছ বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়।

শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের একটি অংশ চর পরে আলাদা হয়ে গেছে অনেকদিন আগে। মূল নদীর সঙ্গে সংযোগ থাকলেও নেই কোনো স্রোত। বড় জলাশয়ের মতো এ জলাভূমিতে বড় বড় খাঁচায় করে চলছে মাছ চাষ। প্রথমে একটি খাঁচা নিয়ে চাষ শুরু করা হলেও বর্তমানে বেড়েছে খাঁচার সংখ্যা। সেই সঙ্গে বেড়েছে নানা প্রজাতির মাছের চাষও। আর এসব খাঁচার মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে বলে চাষিরা জানান।

খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষিদের একজন তানজিল আহমেদ। তিনি জানান, পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ করে একটি ফ্রেমের সঙ্গে ৩০টি করে খাঁচা তৈরি করিয়েছেন। প্লাস্টিকের ভাসমান ড্রামের মাধ্যমে দীর্ঘ খাঁচাগুলোকে ভাসিয়ে রাখা হয়।

তিনি আরো জানান, প্রতিটি খাঁচার গভীরতা ছয় ফুট, প্রস্থ ১০ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ২০ ফুট। প্রতিটি খাঁচায় তিনি মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ করছেন। বছরের জুলাই মাসে ০.২ মি.মি. সাইজের পোনা মাছ কিনে খাঁচায় ছাড়েন। পাঁচ মাসের মধ্যেই মাছ বিক্রির উপযুক্ত হয়। সাধারণত ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম হলেই স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন। স্থানীয় খুচরা বাজারে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এ মাছ।

একটি ইউনিটে ৩০টি করে খাঁচা থাকে। প্রতি ইউনিটে দিনে তিন বেলা খাবার লাগে সাড়ে সাত ব্যাগ। ১০৫০ টাকার একেকটি ব্যাগে খাবার থাকে ২০ কেজি করে। সে হিসেবে দিনে প্রায় ৭৮৭৫ টাকা (দাম মাঝে মধ্যে কমবেশিও হয়) খরচ হয়। মাছের ওজন আটশ’ গ্রাম থেকে এক কেজি হলে নয়/১০ মাস লাগে। তবে পাঁচ/ছয় মাসে ওজন আধা কেজি হলেই বাজারে বিক্রি করা যায়।

খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষের সুবিধা জানতে চাইলে তিনি জানান, খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পুকুরের প্রয়োজন হয় না। এ ধরনের জলাশয়ে একাধিক খাঁচা করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যায়। তাছাড়া বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে হয় না। যা খরচ হয় তার মধ্যে সাধারণত খাঁচা তৈরি করতেই খরচ বেশি পড়ে যায়। একটি খাঁচা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়, তাই খরচ পুষিয়ে যায়। তার ৩০টি খাঁচার মাছের জন্য প্রতিদিন এক বস্তা করে খাবার লাগে। বাজারে পাওয়া যায় এমন সাধারণ মাছের খাবারই এদের দেয়া হয়।

একটি ইউনিট তৈরি করে এক সিজনে পুরো খরচ উঠিয়ে আনা সম্ভব।

শিবচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এটি এম সামচুজ্জামান জানান, শিবচরের জলাশয়গুলোতে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত এভাবে চাষ করলে সঠিক পরিমানে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ বাজারে বিক্রি করা যায়। এ কারণেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খাঁচায় মাছের চাষ। উপজেলা মৎস্য অফিস খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষের ওপর চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে।

আগামীনিউজ/জাকির/মাসুম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে