Dr. Neem on Daraz
Victory Day

উলিপুরে খাদ্য গুদামে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ধান ক্রয় সম্পন্ন


আগামী নিউজ | জাহিদ আল হাসান প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২০, ১১:০৫ এএম
উলিপুরে খাদ্য গুদামে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ধান ক্রয় সম্পন্ন

কুড়িগ্রামের উলিপুর খাদ্য গুদামে কৃষকের স্বাক্ষর জাল করে বিল উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে।

প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কৃষকের পরিবর্তে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ক্রয় করেন ওই দুই কর্মকর্তা। সিন্ডিকেট চক্রের দাপটে মুখ খুলতে পারছেন না ভূক্তভোগী কৃষকরা। এভাবেই সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে।

খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারি ভাবে আমন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা এ উপজেলায় নির্ধারন করা হয় ২ হাজার ৫৬৪ মে.টন। সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের সময়সীমা ছিল ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় ৫ মার্চ পর্যন্ত সময়বৃদ্ধি করা হয়। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় লটারীর মাধ্যমে কৃষক বাছাই করে বরাদ্দ দেয়া হয়। আমন ধান সংগ্রহের শুরু থেকেই একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠে।  লটারির পর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হেমন্ত কুমার বর্মন ওই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে লটারীর তালিকায় থাকা কৃষকের ভোটার আইডি কার্ডসহ কৃষক কার্ড ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় সংগ্রহ করেন। এরপর সিন্ডিকেটের লোকেরা ওই দুই কর্মকর্তা সাথে যোগসাজশ করে বিল ভাউচার তৈরি করে অগ্রনী, সোনালী ও জনতা ব্যাংক উলিপুর শাখা থেকে বিল উত্তোলন করেন।

কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ওই সিন্ডিকেট অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কৃষকের স্বাক্ষর জাল করে বিল উত্তোলন করে। অভিযোগ রয়েছে, কৃষকেরা ধান নিয়ে খাদ্য গুদামে গেলে গুদাম কর্তৃপক্ষ তাদের নানা ভাবে হয়রানী করে। ফলে কৃষকেরা অসহায় হয়ে সিন্ডিকেটের লোকজনের কাছে তাদের বরাদ্দ বিক্রি করে দেন।

সরকার নায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নিলেও কৃষকের পরিবর্তে অসাধু কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেটের লোকজনের পকেট ভারী হয়েছে। আরো অভিযোগ রয়েছে, লটারীর তালিকায় কৃষকের পরিবর্তে ভূমিহীন ও এলাকায় বসবাস করেন না এমন অনেকের নাম এসেছে। এছাড়া অনেক লটারীধারী কৃষক জানেন না তাদের নাম তালিকায় রয়েছে। লটারী হলেও শেষ পর্যন্ত তালিকা প্রকাশ নিয়ে লুকোচুরি চলে।

অথচ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা বলছেন, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়েছে।

খাদ্য গুদামের একটি সূত্র জানায়, শেষ সময় প্রায় ২শ মে.টন ধানের বিপরীতে কোনো কৃষক খুঁজে না পাওয়ায় ওই দুই কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট মিলে লটারীর তালিকায় থাকা কৃষকের নাম ও স্বাক্ষর জাল করে নিজেরাই ধান সরবরাহ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের  মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি নানা অজুহাদ দেখিয়ে পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হেমন্ত কুমার বর্মন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, কাজের এতো চাপ সব কিছু যাচাই বাছাই করা সম্ভব না। তিনি আরো বলেন, যা কিছু হয়েছে আমার অজান্তে হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি মো. আবদুল কাদের জানান, কৃষকদের সুবিধার জন্য আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে লটারীর ব্যবস্থা করেছি। জাল স্বাক্ষরে বিল উত্তোলনের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আগামীনিউজ/জাহিদ/মাসুম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে