যশোরঃ ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত ৪৬ জনের মধ্যে একজনের বাড়ি যশোরে। তার নাম কামরুল হাবিব রকি (২১)। সে যশোর সদর উপজেলার ধোপাখোলা গ্রামের কবীর হোসেনের ছেলে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত দুই মাস আগে ঢাকার বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে চাকরি নেন রকি। এখানে তিনি কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে আগুন লাগে। আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে মারা যান রকি। বাড়ি থেকে যাবার দুই মাস পর তিনি যশোরে ফিরলেন লাশ হয়ে।
তার মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে সদর উপজেলার ধোপাখোলা গ্রামের বাড়িতে। শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে তার মৃতদেহ পৌঁছায় গ্রামের বাড়িতে। তার মৃত্যুতে সংবাদে স্বজন, প্রতিবেশীরা বাড়িতে ভিড় করে একনজর দেখার জন্য। তাদের আহাজারি ও কান্নায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এরপর বাদ জুম্মা ধোপাখোলা গ্রামের মসজিদ প্রাঙ্গনে তার নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় রকিকে।
নিহত রকির মামা জিহাদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে রকির মেসেঞ্জারে ভিডিওকল দিয়েছি, সে রিসিভ করেনি। পরে আমাকে কল ব্যাক করে বাঁচানোর আকুতি জানায়। আমাকে বলে, ‘মামা আমাদের ব্রাঞ্চে (কাচ্চি ভাই বেইলি রোড শাখা) আগুন লাগছে, আমি আটকা পড়েছি। আমাকে বাঁচাও।’ কিছুক্ষণ পর কল কেটে যায়। আমি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তারা জানান, উদ্ধারকাজ চলছে, ধৈর্য ধরুন। এরপর আমি ঢাকায় রওয়ানা হই। সেখানে হাসপাতালে পাই রকিকে। ততক্ষণে তাকে মৃত ঘোষণা করেছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমিই রকিকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ওর চাকরির পর আমিই ঢাকা চিনিয়েছি। গত ডিসেম্বরে সে চাকরিতে ঢুকেছে। আজ ওর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম‘।
নিহত রকির ভাই কামরান হোসেন সাজিম বলেন, তার ভাই আলিম পাস করে গত ডিসেম্বরে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ক্যাশিয়ার পদে চাকরি নেন। বৃহস্পতিবার সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুন লাগে। রকি ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান। আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ বাড়িতে এসেছে।
সাজিম আরও বলেন, ‘আমরা তিন ভাইয়ের মধ্যে রকি সবার বড়। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে চাকরি করে সংসারের হাল ধরেছিল। বাবা ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালান। তাদের দুজনের আয়ে আমাদের সংসার চলতো। ভাইকে এভাবে হারাতে হবে কখনো কল্পনাই করিনি।’
মনির হোসেন/এম