ছবি: আগামী নিউজ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি ) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে ভর্তির মেধাক্রম তৈরিতে মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ নাম্বার হতে ১০০ নাম্বার নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফলে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলের ওপরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নির্ভর করছে।ভর্তি সার্কুলার প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় জিপিএ হতে নাম্বার কমানোর দাবি জানান ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে ১০০ নম্বর গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা থেকে নেওয়া হবে।বাকি ১০০ নম্বর জিপিএ এর ভিত্তিতে,যার মধ্যে এসএসসিতে যথাক্রমে ৫০ এবং জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে দেওয়া অটোপাশের এইচএসসিতে ৫০ নাম্বার রাখা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন,এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অটোপাশের বিষয়টি মাথায় রেখে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জগন্নাথ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকে ২০ নাম্বার রেখেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,
গুচ্ছভুক্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের জন্য আলাদা নম্বরই রাখেনি।এসময় তারা জিপিএ হতে নাম্বার কমানোর দাবি জানান।
জিএসটি স্কোর ৬২.৫ পাওয়া একজন ভর্তিচ্ছু তানভীর শরিফ বলেন, জিপিএর উপর ১০০ নাম্বার রাখা আমি অযোক্তিক মনে করছি। জিপিএর ১০০রাখা মানে জিপিএর নাম্বার দিয়ে মূলত মেরিট পজিশন নির্ধারণ করা হচ্ছে। আমি ৬২.২৫ পেয়েও যারা ৪৫ পেয়েছে তাদের নিচে পড়ে যাচ্ছি শুধু মাত্র জিপিএর উপর ১০০ নাম্বার রাখার কারণে। তাহলে গুচ্ছ ভর্তি পরিক্ষা নেয়ার যৌক্তিকতা কি। জিপিএর নাম্বারের উপর নির্ধারণ করেই মেরিট প্রকাশ করতে পারতো। আর তাছাড়া এবার যেহেতু এইচএসসিতে অটো পাশ দিয়েছে আর এই অটোপাশে সঠিক মেধার মূল্যায়ন হয়নি তাই বিতর্কিত রেজাল্টের উপর নাম্বার রাখা আদৌ ঠিক মনে করিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে বলে আমি আশা করি।
নুর মোহাম্মদ আতিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, যেখানে ঢাবি,চবি,জবি, জাবি সহ আরো অনেক ভার্সিটি ২০ এর বেশি জিপিএ মার্ক রাখেনাই, সেখানে নোবিপ্রবি ১০০ ধরে,জাতীয় ভার্সিটির মতো জিপিএ বেজড করে ফেলবে নাকি? এখন একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় পেলো ৩০ তার জিপিএতে আছে ১০০ আরেকজন পরীক্ষায় ফেলো ৫০ তার জিপিএতে আছে ৭৫ তাহলে ৩০ পাওয়াটা এগিয়ে গেলো না? এটা'ত চরম বৈষম্য। পাব্লিক ভার্সিটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ফলো করবে কেন? এবছর অটো পাস,ভুরিভুরি জিপিএ ফাইভ,এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, ভর্তি পরীক্ষার জিপিএর বিষয়টি এ মুহুর্তে আমার খেয়াল নেই। আমি জিপিএ সম্পর্কে ঠিক বলতে পারবনা। বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য ভর্তি কমিটির আহবায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী ভর্তি কমিটির আহবায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
এবিষয়ে নোবিপ্রবির সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ও বানিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর যে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটি ভর্তি কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত। করোনার কারনে শিক্ষার্থীরা এবারে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও এসএসসি পরীক্ষার সময় তারা পড়াশোনা করেই পরীক্ষা দিয়েছে সেইদিক বিবেচনায় আমরা জিপিএ কে গুরুত্ব দিয়েছি। এখন যারা আবেদন করবে আমাদের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত মেনেই আবেদন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড.নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, যেহেতু জেএসসি এবং এসএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি'র ফলাফল দেওয়া হয়েছে সুতরাং এটা অটো পাশ হলেও ভ্যালুলেস নয়। কারণ যারাই জেএসসি এবং এসএসসি ভালো করেছে তারাই কিন্তু এইচএসসিতে ভালো করেছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন ২৩ তারিখ একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং রয়েছে সেখানে আমরা বিষয়টি আলোচনা করবো।
উল্লেখ্য, মোট ৬টি গ্রুপে ১৩৯১টি আসনে ভর্তি নেওয়া হবে।ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।প্রতি গ্রুপে আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা।‘এ’ ইউনিটের শিক্ষার্থীরা এ,বি,সি এবং ডি গ্রুপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ‘বি’ ইউনিটের শিক্ষার্থীরা ডি এবং ই গ্রুপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 'সি' ইউনিটের শিক্ষার্থীরা ডি এবং এফ গ্রুপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আগামীনিউজ/ হাসান