ঢাকাঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইউনাইটেডে নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) এর প্রতিনিধি আসিফ আল মামুনকে মারধর এবং লাঞ্ছনার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক যায়যায়দিনের প্রতিনিধি শিহাব উদ্দিন বলেন," বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়ের দোকানদার থেকে শুরু করে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কেউই রেহাই পাচ্ছে না। যেখানে যাকে যেভাবে পাচ্ছে অপমান, অপদস্ত, নির্যাতন করছে। আমরা দেখেছি বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। প্রসাশন বিচারের নামে প্রহসন করেছে। এই প্রহসন যদি আবারো করা হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচীতে যেতে বাধ্য হব।"
মানবন্ধনে সাংবাদিকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, "স্বাধীন সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বলতে গেলে কেন বাধা দেয়া হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। গণরুম, গেস্টরুম প্রথা জিইয়ে রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ছাত্রলীগ বেপরোয়া হয়ে গেছে। সাংবাদিক পেটাতে পেরেছে বলে তারা উল্লাসে মেতে ওঠে। অতিদ্রুত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে কঠিন শাস্তির আওতায় নিয়ে আনতে হবে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিকার না পাওয়ার কারণে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।"
জাবির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম বলেন, "আজকে আমরা একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে বসবাস করছি। ফ্যাসিবাদের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভিন্ন মতকে দমন করে রাখা। সারাদেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে জাহাঙ্গীরনগর তার বাইরে না। লোক দেখানো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আমি আশা করি যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সরাসরি বহিষ্কার করা হবে।"
মানববন্ধনে শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবকন্ঠের প্রতিনিধি নাছির উদ্দিন শিকদার, জাবি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান ও নূর হাসান নাঈম প্রমুখ।
মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৃধা মো. শিবলী নোমান, জাব ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায়।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের গেস্টরুম চলাকালে কেউ একজন উঁকি দেয়, তাকে ধরতে না পেরে সাংবাদিক আসিফকে দেখে তার উপর হামলা করে তারা।
সৈকস ইসলাম/এমআইসি