ঋণের ফাঁদে ফেলে চীন-এশিয়া আফ্রিকার গরীব দেশগুলোর দখল নিতে চাইছে!

মো.আলি জামান এপ্রিল ১৩, ২০২২, ০৯:৩৬ এএম
প্রতীকী ছবি

ঢাকাঃ পশ্চিমা এবং ভারতের মিডিয়াগুলো তারস্বরে চিৎকার করে চলেছে একটা কথা বলে। সেইটা হলো- China debt trap.

ঋণের ফাঁদে ফেলে চীন-এশিয়া আফ্রিকার গরীব দেশগুলোর দখল নিতে চাইছে। এই প্রচারনাকালে তারা শ্রীলংকার নেয়া চীনের ঋণকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করছে। বলছে, চীনের দেয়া ঋণের কারনেই আজ শ্রীলঙ্কা এই দুর্দশায় পড়েছে। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের পরিমান ৪৫ বিলিয়ন ডলার।

১৭ জানুয়ারি ২০২২ সালে- রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, শ্রীলঙ্কার এই বৈদেশিক ঋণের ৩৬.৪% বাণিজ্যিক ঋণ (ISB অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সভরেন বন্ড ছেড়ে নেয়া), এডিবি-র ঋণ ১৪.৩%, জাপানের ঋণ ১০.৯% এবং চীন থেকে নেওয়া ঋণ ১০.৮%। এর পরে ঋণ দাতাদের তালিকায় আছে ভারত, বিশ্ব ব্যাংক, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

শ্রীলঙ্কার সরকার ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দর চীন দখল করে নিয়েছে- এমন একটা প্রচারণা বাজারে খুব চালু। প্রকৃতপক্ষে শ্রীলঙ্কার এই বন্দরটি চীনের ঋণে তৈরি হয়েছে ঠিকই। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে  আয় কম থাকায় পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কা ৯৯ বছরের জন্য বন্দরের ৭০% ব্যবস্থাপনা একটা চীনা কোম্পানির কাছে দিয়েছে। অবশিষ্ট ৩০% শ্রীলঙ্কা নিজেদের কাছেই রেখেছে। সেখানে- আয় থেকে ঋণ পরিশোধ হবে, চুক্তিতে এমনই উল্লেখ আছে।

সবচেয়ে বড় কথা, এই বন্দরটির নির্মানে নেয়া ঋণ ঐ ১০.৮% এর অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের পরিস্থিতি-শ্রীলঙ্কার সাথে তুলনার সময় এখনো আসেনি। যদিও আমাদের মোট বৈদেশিক ঋনের পরিমান ৬৫ বিলিয়ন ডলার, তাহলেও সেইটা জিডিপির ১৪% এর বেশি নয়।

আমাদের ফরেক্স রিজার্ভ বিবেচনায় জিডিপির ৪০% পর্যন্ত ঋণ গ্রহন সহনীয় হিসেবে বিবেচনাযোগ্য, এরূপ ধারনা করা অমুলক নয়।
এর কারন- আমাদের রাজস্ব আদায়, রেমিট্যান্স প্রবাহ, এক্সপোর্ট সন্তোষজনক। আমাদের ফরেক্স রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলার। শ্রীলঙ্কার সেখানে মাত্র দুই বিলিয়ন ডলার।

শ্রীলঙ্কার সমস্যা হলো, বিদ্যমান সংকটের কারনে তারা ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়েছে। যে কারনে বেল আউটের জন্য নতুন ঋণ পেতে তারা সমস্যায় পড়েছে। আমাদের সেই সমস্যা নেই।