ঢাকাঃ 'শূন্য'-মানহীন একটি সংখ্যা। অন্য কোনও সংখ্যার পেছনে জুড়ে দিলে কিন্তু এটির মান হয়ে উঠে অমূল্য। সাধারণ গণিত বিদ্যায় এই জ্ঞান কমবেশি সবারই আছে। কিন্তু শূন্য আসলে কী, এর সঠিক উত্তর জানে একমাত্র কাক। না গল্পের কোনও কথা নয়, সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। খবর লাইভ সায়েন্স।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে দ্য জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স পত্রিকায়। বৈজ্ঞানিকদের গবেষণায় জানা যায়, 'কনসেপ্ট অফ জিরো' কী তা জানে কাক। পঞ্চম শতক বা তার কিছু আগে 'শূন্য' সংখ্যাটি ধারণায় আসে। কোনও রকম ট্রেনিং না থাকা সত্ত্বেও কাক 'শূন্য' দ্বারা কী বোঝানো সেই জ্ঞান রাখে।
জার্মানির তুবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোবায়োলজির গবেষকরা এই তথ্য জানান। তাদের গবেষণায় জানা যায়, শূন্যের সঙ্গে যা খুশি যোগ- বিয়োগ- গুণ- ভাগ করলে কী হতে পারে এই ধারণা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে কাকের।
গবেষক অ্যানড্রেয়াস নাইডার বলেন, "যেকোনও গণিতজ্ঞ বলবেন 'শূন্য' আবিষ্কার গণিতে একটা আশ্চর্য ঘটনা। শূন্যকে কোনও রুটিনে ফেলা সম্ভব নয়। কোনও বাস্কেটে যদি ৩টা আপেল থাকে তবে আপনি তা গুণতে পারেন। তবে না থাকলে কেউ বলেন না এখানে শূন্য আপেল রয়েছে। সকলেই বলবেন এটা খালি।"
এই ধারণা থেকেই একটি কাক নিয়ে পরীক্ষা করানো হয়। যতবার পরীক্ষা করা হয়েছে ততবার দেখা গিয়েছে, বাকি সংখ্যার মতো কাক শূন্যও বুঝতে পারছে। বিষয়টি বেশ অবাক করেছে গবেষকদের। এরপর গবেষকরা কাকের ব্রেনের প্যাটার্ন বা গতিবিধি পরীক্ষা করেন।
যেখানে দেখা যায়, একের আগে যে শূন্য হয় তা একটি কাক বুঝতে পারে। যা যথেষ্ট অবাকের বিষয়।
গবেষকরা বলেন, পরীক্ষার সময় কাকের সামনে একটি কম্পিউটার স্ক্রিনে শূন্যর সঙ্গে ৪টি রঙের একটি স্ক্রিন দেখানো হয়। পাশাপাশি অন্যান্য সংখ্যার সঙ্গে ৪টি রঙের স্ক্রিন দেখানো হয়। যতবার অন্যান্য সংখ্যা স্ক্রিনে এসেছে ততবার কাক স্ক্রিনে ঠোক্কর মেরেছ বা মাথা নাড়িয়েছে। কিন্তু যখনই শূন্য এসেছে কাক কোনও রকম প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
গবেষণা শেষে কাকের 'শূন্য' বোঝার জ্ঞানের কথা জোরালোভাবে দাবি করেছেন গবেষকরা। যা দ্য জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়।