বাংলাদেশকে গতির চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০, ১০:১৭ এএম
ছবি সংগৃহীত

ঢাকাঃ করোনাভাইরাসের প্রভাব সবচেয়ে কম পড়েছে শ্রীলঙ্কায়। সেই সুযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির ক্রিকেটাররা। প্রতিপক্ষও পেয়ে যাচ্ছে খুব শিঘ্রই। আর সেটি বাংলাদেশ। তামিম-মুশফিকদের নিয়ে এরই মধ্যে হিসেব কষতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। কীভাবে ঘায়েল করা যায় তারও হিসেব মেলাচ্ছে দ্বীপ দেশটি। কোন অস্ত্র দিয়ে বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলা হবে, এটাও ভেবে রেখেছে তারা। করোনাকালের এই সফরে যেকোনোভাবেই বাংলাদেশের বিপক্ষে এগিয়ে থাকতে চায় দিমুথ করুনারতে বাহিনী। এ নিয়ে তেমন রাখঢাকও রাখেননি শ্রীলঙ্কার প্রধান নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার অশান্ত ডি মেল।

শ্রীলঙ্কা সব সময়ই ঘরের মাঠে স্পিনের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিপক্ষকে ঘূর্ণি উইকেটে ফেলে বিভ্রান্ত করাই তাদের পুরোনো কৌশল। তবে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সে কৌশল পাল্টাচ্ছে তারা। এসএলসি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ঘোষণা না করলেও দেশটির কয়েকটি গণমাধ্যম জানাচ্ছে তিন টেস্ট সিরিজের জন্য এরই মধ্যে ২৩ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডও চ‚ড়ান্ত করেছে শ্রীলঙ্কা। তাতে জায়গা পেয়েছেন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ৬ তরুণ। 

নবাগতদের মধ্যে প্রাথমিক স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন লাহিরু উদারা, দাবিন্দু তিলেকারতে, সন্তুষ গুনাথিলাকা, মিনোদ ভানুকা, ওয়াইন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিস। এরমধ্যে লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা ও দুই হাতেই বল করতে পটু কামিন্দু মেন্ডিস খেলে ফেলেছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেট। বাকি চারজনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একবারেই আনকোরা।

এই দল নিয়ে কিছু না বললেও ডি মেল জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে গতি দিয়েই সমস্যায় ফেলতে চায় শ্রীলঙ্কা। স্কোয়াডে পেসারদের আধিক্য থাকবে বলেই স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য আইল্যান্ডকে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, ‘আমরা বাংলাদেশকে গতি আক্রমণ দিয়েই হারাতে চাচ্ছি। এটা নিশ্চিত যে দলে স্পিনারের আধিক্য থাকবে না।’ ফাস্ট বোলিংকে এ মুহ‚র্তে শ্রীলঙ্কান দলের শক্তিই মনে করেন ডি মেল, ‘আমাদের শক্তি এ মুহ‚র্তে পেস আক্রমণ। বাংলাদেশ দলে বেশ কিছু ভালো স্পিনার থাকবে। তবে পেস আক্রমণই আমাদের দলের শক্তি। আমরা আমাদের শক্তির প‚র্ণ ব্যবহার করতে চাই।’

করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে ক্রিকেটের বাইরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দুই দলই। শ্রীলঙ্কায় ঘরোয়া ক্রিকেট মাঠে গড়ালেও বাংলাদেশে এখনো প্রতিযোগিতাম‚লক ক্রিকেট শুরু হয়নি। এ মাসের শেষ দিকে ৩০ সদস্যের দল নিয়ে শ্রীলঙ্কায় যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেখানে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে জৈব সুরক্ষিত পরিবেশে থাকবে দল। জাতীয় দলের সঙ্গে সফরকরা এইচপি দলের সঙ্গে ভাগ হয়ে মুশফিকুর রহিমরা খেলবেন প্রস্তুতি ম্যাচ। ২৩ অক্টোবর ক্যান্ডিতে শুরু হওয়ার কথা প্রথম টেস্ট। একই ভেন্যুতে হবে দ্বিতীয় টেস্টও। কলম্বোতে শেষ টেস্ট খেলে নভেম্বরের মাঝামাঝি দেশে ফেরার কথা বাংলাদেশ দলের।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) স‚ত্রে যে প‚র্ণাঙ্গ সফরস‚চি পাওয়া গেছে সে অনুযায়ী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ও হাই পারফরম্যান্স দল (এইচপি) কলম্বোর উদ্দেশে ভাড়া করা উড়োজাহাজে রওনা দেবে ২৭ সেপ্টেম্বর। সেখানে দলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। বিসিবি চেয়েছিল কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ এলে পরদিন থেকেই এইচপির কোনো খেলোয়াড় যেন অনুশীলনে নেমে পড়তে পারে। এসএলসি বিসিবির সে চাওয়া প‚রণ করবে।

সুচি অনুযায়ী প্রথম দুই টেস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ক্যান্ডিতে। প্রধান নির্বাচক ডি মেলের গতি তত্তে¡র ম‚ল এটিই। ক্যান্ডির উইকেট সব সময়ই পেস বোলারদের সাহায্য করে। ৩১ অক্টোবর দ্বিতীয় টেস্টে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরতে পারেন সাকিব আল হাসান। সফরের শেষ টেস্ট কলম্বোয়, শুরু হবে ৮ নভেম্বর।

শ্রীলঙ্কার প্রাথমিক দলঃ 
দিমুথ করুণারতে্ব (অধিনায়ক), ওশাডা ফার্নান্দো, লাহিরু উদারা, কুশল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দিনেশ চান্দিমাল, কুশল পেরেরা, নিরোশান ডিকভেলা, মিনোদ ভানুকা, লাহিরু থিরিমান্নে, সান্তুষ গুনাতিলকা, কামিন্ডু মেন্ডিস, ধনিঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দিলরুয়ান পেরেরা, লক্ষণ সান্দাকান, লাসিথ এমবুলদেনিয়া, দুভিন্দু তিলকারতে, সুরঙ্গা লাকমল, লাহিরু কুমারা, বিশ্ব ফার্নান্দো, কাসুন রাজিতা, আসিতা ফার্নান্দো।

আগামীনিউজ/জেহিন