রংপুরঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দেশে উন্নয়ন কাজে কিছুটা বাধা এলেও উল্টো গতি ফিরেছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের ছয় লেনের নির্মাণ কাজ।তবে নির্মাণ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মহাসড়কের পাশে পীরগঞ্জ এলাকার সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক ও তিনটি মসজিদ।এর মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ৩৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভূমি জটিলতা ও মহাসড়কের পাশে তিনটি মসজিদ থাকায় কাজে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি অল্পকিছু দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। করোনা, গত বছরের বন্যা, জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে ওঠার পর রংপুর-ঢাকা ছয় লেন মহাসড়ক নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি থেকে রংপুরের বড়দরগা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কের ৭নং প্যাকেজের আওতায় ছয় লেনের নির্মাণ কাজ প্রায় ৩৭ ভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে। কাজের গতি প্রতিদিন বেড়ে চলছে। ২০২২ সালে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
আরো পড়ুন:
দিনাজপুরে আয়োজন করে দুই পুতুলের বিয়ে, অতিথি ১০০
চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা; রংপুরে দুই সাংবাদিক কারাগারে
সড়ক নির্মাণ প্রকল্প প্যাকেজ-৭ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী ম আফিদ হোসেন জানান, ৫২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি থেকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। এর জন্য ২৪০ একর জমি হুকুম দখল করা হয়েছে। জমির মালিকদের রংপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শত কোটি টাকার বেশি ক্ষতি পূরণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধ দখলদারদেরও ৩ কোটি দেওয়া হয়েছে। এই প্যাকেজের আওতায় ৩০টি কালভার্টের মধ্যে ২৭টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চলমান আছে ৩টির কাজ অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে। তিনি জানান, মাহাসড়কের এই অংশের পলাশবাড়িতে এক ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে যার পরিধি হবে ১৭৬ মিটার। এছাড়াও পীরগঞ্জের ধাপের হাটে, লালদিঘিতে ওভার পাস নির্মাণ করা হবে। পলাশবাড়িতে হাতির ঝিলের আদলে আন্ডার পাস নির্মাণ করা হবে।
প্রকৌশলী ম আফিদ হোসেন জানান, ছয় লেন এই সড়কের মধ্যে চার লেনে দ্রুত গতির যানবাহন চলাচল করবে। বাকি দুই লেনে চলাচল করবে স্বল্প গতির বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। তিনি বলেন, ৫২৫ কেটি টাকার এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে জমির মালিকদের ক্ষতি পূরণ, নতুন অফিস ভবন নির্মাণ, মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে।
প্রকল্প ম্যানেজার জানান, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জ এলাকার সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের আশপাশের জমি বুঝিয়ে দেওয়াসহ লালদিঘি ও খেদপতপুর এলাকার তিনটি মসজিদ সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা রংপুর জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি অল্পকিছু দিনের মধ্যে আমরা এসব জায়গা বুঝে পাব এতে করে আমাদের কাজের গতি আরও বেড়ে যাবে। ২০১৯ সালের জুন মাসে সরকার রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেন নির্মাণের আদেশ দিলেও নানা জটিলতার কারণে ২০২০ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
অপরদিকে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের প্যাকেজ-৮ এর পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুর নগরীর মর্ডান মোড় পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়কের জন্য ৪৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই নির্মাণ কাজের আওতায় ১৭টি কালভার্ট, চারটি ব্রিজ রয়েছে। এসব ব্রিজ ও কালভার্টের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জমি হুকুদ দখল করতে সময় লাগে সেজন্য দেরি হচ্ছে। জমি হুকুম দখলের বিষয়টি ৭ ধারা পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে জটিলতার নিরসন হবে।