ঢাকাঃ করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য সারা বিশ্বে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন মাস্ক ব্যবহার করতে। সেই সাথে সংক্রমণ রোধে হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করতে। কিন্তু বর্তমানে দেশের বাজারে অস্বাস্থ্যকর মাস্ক এবং অকার্যকর সেনিটাইজারে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। তাছাড়া এসবের ব্যবহার দিন দিন কমছে। ফলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
মানহীন সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। রাজধানীর যত্রতত্র এসব সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ রাস্তার পাশে, কেউ ভ্যানে আবার কেউ ঝুড়িতে সার্জিক্যাল মাস্ক, অকার্যকর মানহীণ হ্যান্ড সেনিটাইজার, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, ফেস-শিল্ড, সার্জিক্যাল ক্যাপ, পিপিই, সাধারণ মাস্ক বিক্রি করছেন।
পুরান ঢাকার বাবুবাজার, নাজিরাবাজার, মিডফোর্ড এলাকায় দেখা যায়, মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই থেকে শুরু করে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য যে মানহীন, তা দেখলেই বোঝা যায়। একই অবস্থা সারাদেশের মার্কেটসহ সকল বিপনী বিতানে।
এসব মাস্ক তৈরি হচ্ছে চীন থেকে আমদানিকৃত টিস্যু জাতীয় সিনথেটিক পেপার ও কাগজে বা নিম্ন মানের রিসাইক্লিং উপকরন দিয়ে। চীন থেকে সরাসরি আমদানিও হচ্ছে দিদারচ্ছে। পানি আর কৃত্রিম রঙ মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে সেনিটাইজার যেখানে ইথানলের বালাই নেই। ফলে করোনা প্রতিরোধের চেয়ে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে হাতের ত্বকের।অস্বাস্থ্যকর মাস্ক পরার কারনে নিঃশ্বাস- প্রশ্বাসে কষ্ট ছাড়াও মুখ ও ত্বকের চামড়া ঘেমে ত্বকে ক্ষত দেখা দিচ্ছে অনেকের।
তাছাড়া এসব সামগ্রী বিক্রির অনুমোদনও নেয়া হয়নি। কিন্তু নির্বিকার সংশ্লিষ্টরা। এভাবেই অনুমোদনহীন এবং মানহীন সুরক্ষা সামগ্রী রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। যাচ্ছে মফস্বল শহরেও। একসময় যারা ফুটপাতে হকারি করতেন, তারাই এখন সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রেতা বনে গেছেন।
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে সেন্ট জর্জেসের ডঃ ডেভিড ক্যারিংটন বলেন, সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক বায়ুবাহিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয়। তবে হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে এই মাস্ক। আর হাত থেকে মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও কিছু সুরক্ষা এটা দেয়।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. তৌফিকুর রহমান ফারুক বলেন, এভাবে যেখানে সেখানে সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি আমাদের কঠিন বিপদে ফেলে দেবে। কারণ এগুলো মানহীন। সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুমতি না নিয়েই এগুলো বিক্রি হচ্ছে। আর যারা বেচাকেনা করছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমণ রোধে যেমন নেয়া দরকার প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা তেমনি এসব ব্যবস্থা যথেষ্ট সক্ষম কিনা সেদিকে আমাদের সচেতন হতে হবে।