স্পিডবোট চালাতে লাগেনা লাইসেন্স, ১০ জনের সিটে বসে ৩৫ জন

নূর নবী জনী, বরিশাল ব্যুরো মে ৫, ২০২১, ১০:৫৬ এএম
ছবি সংগ্রহীত

ঢাকাঃ শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার নৌপথে পাল্লা দিয়ে যাত্রী বহন করে প্রায় আড়াই’শ স্পিডবোট। এসব স্পিডবোটের চালকদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। এমনকি এদের বড় একটি অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক। অবৈধ স্পিডবোট, অদক্ষ চালকের কারণে এই নৌপথ এখন একটি মরন ফাঁদ। এমনকি লাইফ জ্যাকেটের মতো সুরক্ষাব্যবস্থাও না থাকায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সম্ভাবনা বেশি।

এদিকে এই নৌপথে চলাচলরত মাত্র ৫০টির মতো স্পিডবোট বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক লাইসেন্স নিয়েছে। তারও আবার নবায়ন নেই। ফলে এসব স্পিডবোটগুলোই অবৈধ।

মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে দীর্ঘদিনের এক বোট চালক বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নেই। তবে অভিজ্ঞ চালকের সঙ্গে চার-পাঁচ দিন থাকলেই বোট চালানো শেখা যায়।’ কারও কারও বয়স কম, ইচ্ছেমতো চালায়।

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বাংলাবাজার ঘাটের পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, উভয় ঘাটে আড়াই শ স্পিডবোট চলে, যার একটিরও লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। তারপরও প্রতিবছর মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা হয়। কিন্তু কেন হয়, তা বলতে পারবোনা।

এক তরুণ চালক বলেন, ‘কাউন্টার থেকে আমাদের যতজন নিতে বলে, আমরা তার বেশি নেইনা। এখানে আমাদের লাভ কম।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক বলেন, স্পিডবোটের সাধারণ ভাড়া ১৫০ টাকা। কিন্তু যাত্রীর ভিড় থাকলে দফায় দফায় ভাড়া বেড়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পৌছে। ভাড়া বেশি হলেও জনপ্রতি মাত্র ৭০ টাকা পান বোট মালিক আর ৩০ টাকা পান চালক। বাকি সব টাকাই ঘাটের কাউন্টারের লোকজন ও বিভিন্ন মহলের মধ্যে ভাগ–বাঁটোয়ারা হয়।

শিমুলিয়া ও বাংলাবাজারের এই নৌপথ দিয়ে দৈনিক গড়ে ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যাত্রীদের বড় একটি অংশ পারাপার হয় স্পিডবোটে। বর্তমানে এই নৌপথে প্রায় ২৫০টি স্পিডবোট চলাচল করে। এ ছাড়া ফেরি, লঞ্চ ও ট্রলারেও যাত্রী পারাপার হয়। করোনাভাইরাসের কারণে লঞ্চসহ সকল যান চলাচল বন্ধ থাকলেও দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই অবাধে চলাচল করে স্পিডবোট।

এদিকে লাইসেন্স নিয়ে সবার মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে স্বীকার করে বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রায় ৫০টি স্পিডবোটের লাইসেন্স নেওয়া থাকলেও এগুলোর হয়তো নবায়ন নেই। আমাদের লাইসেন্স দিতে কোনো সমস্যা নেই। সবার মধ্যে একটি সমন্বয়হীনতা ছিল। এরপরও আমরা অতিদ্রুত স্পিডবোটগুলো লাইসেন্সসহ চলাচলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব।’

আগামীনিউজ/জনী