লকডাউনে শিথিলতা: ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপদ

অনিক সিকদার এপ্রিল ২৭, ২০২১, ০৪:৪৮ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ ভারত ও শ্রীলংকায় যে ভ্যারিয়েন্টের কোডিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে তা অত্যান্ত ভয়াবহ। যা ৫ দিনে একজনকে মেরে ফেলতে পারে এবং প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

ভারত ও শ্রীলংকায় এই কোভিড-১৯ আবিস্কৃত হওয়ার পর ভারত থেকে বাংলাদেশে ১০ জন প্রবেশ করে এবং তাদের শরীরে নোভেল করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তাদেরকে যশোর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে রাখা হয়। সেখান থেকে সোমবার (২৬ এপ্রিল) ১০ জন করোনা রোগী পলায়ন করেন।

যদিও তাদের সকলকেই পুলিশ আটক করে পুনরায় বিভিন্ন হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করে। তবে তারা হাসপাতাল থেকে পলায়নের পরে যেসকল স্থানে ভ্রমন করেছেন সেখানে অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন। তার থেকে যদি কয়েকজন সংক্রমিত হয়ে থাকেন এবং সেই সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে আরও সংক্রমিত হয় সেক্ষেত্রে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের করোনা সারাদেশেই ছড়িয়ে যাবে।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ঢুকে গেছে বা ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ভাইরাস যদি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ভারতের চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হবে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ একটি ঘনবসতি দেশ এই দেশে যদি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এর করোনা ঢুকে পড়ে তাহলে মানুষের মৃত্যু খুবই কঠিনভাবে হবে যা কল্পনার অতীত।

পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের রাজধানী দিল্লীতে নাজেহাল অবস্থা মৃত্যুর শোকে। রাস্তায় শুয়ে প্রর্যন্ত অক্সিজেন নিতে দেখা গেছে সেখানে। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর তালিকা বৃহৎ হচ্ছে। শশ্মানগুলোতে করোনাক্রান্ত মৃতদেহ দাহ করার জন্য রয়েছে লম্বা লাইন। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ রয়েছে উচ্চ ঝুঁকিতে।

এমনিতেই সারাবাংলাদেশে যে মৃত্যু হয় তার তিন গুণ বেশি মৃত্যু দেশের রাজধানী ঢাকাতে। দেশে কোভিড-১৯ এর জন্য শয্যার ঘাটতি রয়েছে। যদি নতুন ভ্যরিয়েন্ট এর করোনা দেশে ঢুকে তাহলে দেশের কোন হাসপাতালেই শয্যা মিলবে না বলে মতামত বিশেষজ্ঞদের।

এখন দেশে হাট-বাজারগুলো যেভাবে খোলা রয়েছে তাতে করোনা ছড়ানো শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার। খাতা-কলমে লকডাউন থাকলেও বাস্তবে পরিস্থিতি ভিন্ন। দোকান-পাট, হাট-বাজার সবই আগের মতোই চলছে এবং এমন পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে যা সামাল দিতে হলে সরকার ও স্বাস্থ্যবিভাগকে হিমশিম খেতে হবে।

দেশে প্রথম করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয় ইতালি ফেরৎ কিছু প্রবাসী বাংলাদেশীর মাধ্যেমে। তাদেরকে হজ ক্যাম্পে আইসোলেশনে রাখা হলেও তারা হজ ক্যাম্প ভাংচুর-মিছিল ও মিডিয়ার সামনে বিভিন্ন অসামঞ্জস্য কথা-বার্তা বলে। এরপর তাদেরকে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনের জন্য পাঠানো হলেও তারা তেমন কোন বিধি-নিষেধ মানেন নি এবং উক্ত সময় থেকেই দেশে করোনাক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

একইভাবে যদি ১০ জনের মাধ্যেমে বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েশনের করোনা ছড়িয়ে যায় তাহলে এটি বাংলাদেশকে একটি কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারে এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হবে যা শুধুমাত্র দেখা ছাড়া কোন উপায় কারও কাছে থাকবে না।

সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব দেশের লকডাউন কঠোর করতে হবে সরকারকে। ঈদের সময় যদি ঢাকা থেকে মানুষ গ্রামে আসে তাহলে আরেকটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে দেশকে এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আগামীনিউজ/এএস