বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সবুজ ধান ক্ষেতের বাড়ন্ত চারার সাথে দেখা মিলছে হরেক রকম দেশি পাখী। বাড়ন্ত চারা গাছের পোকামাকড় খাওয়ার লোভেই ছুটে আসছে পাখিগুলো। তবে পাখীর সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক কম।
উপজেলার আমশট্ট গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী বলেন, দু-তিন দশক আগে এইসময়গুলোতে যতদূর চোখ যেত, ততদূর দেখা যেত ধান ক্ষেতের বাড়ন্ত চারা গাছে লুকিয়ে থাকা পোকামাকড় খাওয়ার জন্য মাঠের পর মাঠ দলবেধেঁ হরেকরকম পাখি। কিন্তু বর্তমানে অল্প পরিমান পাখীর দলের বিচরণ দেখা যায় ধান ক্ষেতে। তাছাড়া ঝোপঝাড়েও পাখী বসবাসের সংখ্যা কমে গেছে।
পালীমহেশপুর গ্রামের পাখী প্রেমিক প্রভাষক শামশুজ্জামান ছালাম আগামী নিউজকে বলেন, খাদ্য সংকট ও বাসস্থান সংকটে দেশি পাখী হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন ধানক্ষেতে পাখী দেখা গেলেও কিটনাশক প্রয়োগ করার পর ক্ষেতে আর পাখী তেমন দেখা যাবে না।
তিনি আগামী নিউজকে আরও বলেন, বিষাক্ত খাদ্যদ্রব্য গ্রহন করে মারা পড়ছে অনেক পাখী। তাছাড়া বর্ধিষ্ণু জনগনের জন্য বাড়িঘর নির্মান করার কারনে ঝোপজঙ্গল কেটে ফেলতে হয়েছে। আবাসস্থলের অভাবেও পাখীরা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ষাটোর্ধ বেলাল হোসেন আগামী নিউজকে বলেন, আগে গ্রামের পাড়া মহল্লার আশে পাশে অনেক ঝোপঝাড় ছিল। সেখানে বক, শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, টুনটুনি, বুলবুলি, বাবুই, মাছরাঙা, টিয়া, পেঁচা প্রভূতি পাখী বাস করত। সকাল আর সন্ধ্যায় পাখীর কলরবে মুখর হয়ে উঠত চারিদিক। সময়ের পরিক্রমায় প্রকৃতির সেইসব ঐশ্বর্য ফিকে হয়ে যেতে বসেছে।
দুপচাঁচিয়া জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজের কৃষি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক দীনেশ চন্দ্র বসাক আগামী নিউজকে বলেন, জীববৈচিত্রে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় পাখীর ভূমিকা অপরিসীম। পাখি মাধ্যমে উদ্ভিদের বীজ বিভন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, তাতে উদ্ভিদের বংশ বিস্তার ঘটে। ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে পাখী ভাল ফসল উৎপাদনেও ব্যাপক সহায়তা করে। পাখীদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে মানুষদের নিজেদের স্বার্থেই। এজন্য পাখী রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
আগামীনিউজ/এএস