ঢাকা: করোনা মহামারির কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই আজ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে মুসলিম বিশ্ব পার করেছে তাদের একটি অন্যতম উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। এ মাসের শেষ আরো একটি উৎসব ঈদ-উল-আজহা পালন করবে। কিন্তু ঈদেও ছুটিতে সবারই মন চয় পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটি উপভোগ করতে। মন চায় বিনোদনের। এমনই একটি বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে চিড়িয়াখানা। এটি শুধু শিশুদের নয়, সবার কাছেই প্রিয় জায়গায়। এক দিকে বিনোদন অন্যদিকে শিশুদের শিক্ষা। দুটোই চলে এখানে সমান তালে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. নজরুল ইসলাম আগামীনিউজ ডটকমকে জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। চিড়িয়াখানা হলো বিনোদনের অন্যতম জায়গা। বিশেষ করে শিশুদের কাছে এটি অত্যন্ত প্রিয় বিনোদন কেন্দ্র। যা গত চারমাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে।
দেশের এই অবস্থায় স্বাস্থ্য বিধি মেনেও চিড়িয়াখানা খোলার চিন্তা নেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেক দেশে সিংহ এবং বাঘ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রামিত কেউ চিড়িয়াখানায় এলে তা মাধ্যমে প্রাণিদেহেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই রোগ। এছাড়াও জনসমাগমের কারণে নিজেদেরও নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে কোরবানীর ঈদেও চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ডা. মো. নজরুল ইসলাম আশা করেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যখন খুলে দেওয়া হবে। তখন থেকেই চিড়িয়াখানাগুলোও খুলে দেওয়া হবে।
অপরদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ ও করোনা থেকে চিড়িয়াখানার প্রায় ২২শ প্রাণি রক্ষায় অতিরিক্ত সতর্কতায় রয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। প্রচণ্ড গরমের কারণে বেশি আক্রান্ত হয় মাংসাশী প্রাণী। পাখিদের মধ্যেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। চিড়িয়াখানার প্রাণীদের এ দাবদাহ থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গরম থেকে প্রাণিদের রক্ষায় প্রতিটি শেডে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, ভিজাচট দিয়ে বেড়া দেওয়া, ওষুধ, স্যালাইন ও ভিটামিট সরবরাহ, যতটা সম্ভব আর্দ্র খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বৃহৎ মাংসাশী ও তৃণভোজী প্রাণিদের খাঁচায় (পানির হাউজে) পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তাপ বৃদ্ধি পেলে লোমশ প্রাণিদের দেহ থেকে তাপ বের হতে পারে না। ফলে হিট স্ট্রোক, পানি শূণ্যতা, বমি, পাতলা পায়খানা দেখা দিতে পারে। এ জন্য প্রত্যেক জু-অফিসারকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রাণি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরের হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। চিকিৎসার জন্য ডাক্তাদেরও সতর্ক রাখা হয়েছে।
আগামীনিউজ/টিআইএস/এমআর