ঢাকা: করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্ব জুড়েই বিপর্যস্ত শিল্প বাণিজ্য। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে চলে এসেছে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আজহা বা কোরবানির ঈদ। গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে এ অনুষ্ঠান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই এ উৎসবকে কেন্দ্র করে গবাদিপশু লালন-পালন করে থাকে। তা বিক্রি করেই চলে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া, বিয়ে সাদি বা ঘর মেরামতের কাজ। কিন্তু এবারে বাধ সাধছে করোনা সংক্রমণ।
সরকারে পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাট পরিচালনার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। উদ্যোগ নেয়া হয়েছে মোবাইল ও অনলাইনে গবাদি পশু বিক্রির। তারপরেও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন প্রান্তিক চাষি ও গবাদিপশু খামারিরা।
তবে আশার কথা হলো, করোনা এবং কোরবানির পশু যারা বিক্রি করতে পরবেন না, এছাড়াও দুগ্ধ খামারিদের জন্য সরকারি আর্থিক প্রণোদনার পাশাপাশি দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংকও সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, (খামার) ড. এবিএম খালেদুজ্জামান আগামীনিউজ ডটকমকে জানান, করোনার সময়ে আমরা সারা দেশে খামারিদের দুধ বিক্রির জন্য কাজ করেছি। কোরবানির সময়েও খামারিদের পশু বিক্রির জন্য মোবাইল সার্ভিস এবং অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করেছি। তারপরেও যারা পশু বিক্রি করতে পারবেন না, তাদের সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক ও খামারি যেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাকেই সহায়তা বা পুনর্বাসন করা হবে। এজন্য সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ এবং বিশ্ব ব্যাংকের ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে। যা বাংলাদেশি টাকায় টাকায় প্রায় ৮ ১৬ কোটি টাকা (প্রতি ডলার = ৮৫ টাকা হিসেবে)। এটাকা ক্ষতিপূরণ ও লোন হিসেবে দেয়া হবে।
তিনি জানান, বর্তমানে দুগ্ধ খামারিদের প্রতি গরু (৫ লিটারে) ৫০০০ টাকা এবং প্রতি গরু (১০ লিটারে) ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হবে ক্ষতিগ্রস্ত দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদন খামারিদের। এ বছর ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য মজুদ রয়েছে। যার মধ্যে হৃষ্টপুষ্টকৃত গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭৩ লাখ ৫৫ হাজার ও অন্যান্য ৪ হাজার ৫০০টি। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে করোনার কারণে গতবছরের চেয়ে ২৫-৩০ লাখ কম পশু কোরবানি করা হবে। গত বছর কোরবানি করা হয়েছিল প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ গবাদিপশু।
আগামীনিউজ/টিআইএস/এমআর