ঢাকা: ক্রমবর্ধমান মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণে মাছের বিকল্প নেই।কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। সেখানে দখল করে নিচ্ছে বিদেশী মাছ। বেশ কয়েক বছর ধরে দেশীয় বিলুপ্ত প্রায় মাছ ফিরিয়ে আনার কাজ করছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিএফআরআই)।
বাংলাদেশের জলাশয় থেকে বিলুপ্ত প্রায় ২৩ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউটের গবেষকরা এসব প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে এনেছেন বলে জানিয়েছেন মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ।
ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ আগামীনিউজ ডটকমকে জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিলুপ্ত প্রায় মৎস্য প্রজাতির উপর ধারাবাহিক গবেষণার ফসল হিসেবে বিলুপ্ত প্রায় ২৩টি মাছ ফিরিয়ে আনতে স্বক্ষম হয়েছে। এগুলো হলো- ১. পাবদা ২.গুলশা ৩. টেংরা ৪. শিং ৫. মাগুর ৬. গুজি আইর ৭. চিতল ৮. ফলি ৯. মহাশোল ১০. বৈরালি ১১. জাত পুঁটি ১২. মেনি ১৩. বালাচাটা ১৪. গুতুম ১৫. কুচিয়া ১৬. ভাগনা ১৭. খলিশা ১৮. বাটা ১৯. দেশী সরপুঁটি ২০. কালবাউশ ২১. কৈ, ২২. গজার এবং ২৩. গনিয়া।
তিনি বলেন, এক একটি প্রজাতির মাছ নিয়ে গবেষণা করতে প্রায় ৪-৫ বছর সময় লাগে। আগে শুধুমাত্র মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র ময়মনসিংহেই বিলুপ্ত প্রায় মাছ নিয়ে গবেষণা করা হতো এখন আমরা একই সাথে সৈয়দপুর, শান্তাহার এবং যশোর স্টেশনে বিলুপ্ত প্রায় মাছ নিয়ে গবেষণা করছি। অর্থাৎ যে সব ভ্যারাইটি যে এলাকায় পাওয়া যায় বা তার কাছাকাছি স্টেশনে গবেষণা কাজ করা হচ্ছে।
মৎস্য মহাপরিচাল আরো বলেন, নতুন করে আরো ৫টি প্রজাতি নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল দিতে পারবো। এগুলো হলো- আঙ্গুস মাছ, বৈরালি-২ (তিস্তা নদীর), কাইক্কা, রানী এবং লোনা পানির কাউন মাগুর।
মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ৮০০ প্রজাতির মাছ ও চিংড়ি আছে। মাছের মধ্যে ২৬০ প্রজাতি মিঠা পনির ও ৪৭৫ প্রজাতি সামুদ্রিক প্রজাতির। চিংড়ি প্রজাতির রয়েছে ৩৬টি। এগুলোর মধ্যে ২৮ প্রজাতির মিঠা পনির মাছ বিলুপ্তির পথে। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ৫৪ প্রজাতি। এর মধ্যে ১২ প্রজাতি রয়েছে চরম ঝুঁকিতে এবং ১৪ প্রজাতি হুমকির মুখে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশের বিপন্ন মাছের তালিকা চিহ্নিতের জন্য দুটি জরিপ চালিয়েছিল, ২০০০ সালে প্রথম জরিপে ৫৪ প্রজাতির মাছ বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে সর্বশেষ জরিপে তাতে ৬৪ প্রজাতির মাছ চিহ্নিত করা হয়েছে।
পুষ্টিবিদদের মতে, আমাদের দেশে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের গড় ২৫০০ ক্যালরি শক্তি প্রয়োজন । আমার জানি অন্যান্য খাবারের তুলনায় আমিষ জাতীয় খাবার হতে বেশি পরিমাণে ক্যালরি (৪.৩৫ কিলোক্যালরি/গ্রাম) বা শক্তি পাওয়া যায় । দেহ গঠন , দেহের ক্ষয় পূরণ,শক্তি সাধন, দেহ কোষের পুনরুজ্জীবন ঘটানোর জন্য আমিষের গুরুত্ব অনেক । মাছে অল্প পরিমাণে ফ্যাট এবং পর্যাপ্ত পরিমানে প্রোটিন, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড , ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি , ভিটামিন সি, ভিটামিন বি -১২, ভিটামিন বি- ৬ , ম্যাগনেসিয়াম ,আয়রন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পাওয়া যায়।
আগামীনিউজ/তরিকুল/এমআর