ঢাকা: শক্তিশালী বিজ্ঞাপন ও বিপনন কৌশলের দাপটে বিদেশী কোম্পানির কাছে বাজার হারাচ্ছে দেশীয় প্রসাধনী শিল্প।
জানা গেছে, বিদেশী প্রসাধনীর আগ্রাসনের কারণে দেশী প্রসাধনী শিল্পের উদ্যোক্তারা গুনছেন বিপুল পরিমাণের লোকসান। আর এর ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকেরা প্রতিনিয়ত বেকার হতে চলেছে। এক সময়ের দেশের নামী ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্যগুলো দিন দিন বাজার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আর কদর বুঝে কৌশলে বার বার দাম বাড়াচ্ছে বিদেশী কোম্পানিগুলো। এই সুযোগে বিদেশী প্রসাধনীর নকল নিম্ন মানের পণ্যে ছেয়ে গেছে বাজার।
বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিটিএমএ) তথ্য মতে, বছরে দেশে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার প্রসাধনী পণ্য বিক্রি হয়। যার সিংহভাগই চলে যায় বিদেশী কোম্পানির কাছে। দেশীয় উদ্যোগক্তরা বলছেন, দেশীয় প্রসাধনীর কদরহীনতায় আমদানি নির্ভর হয়ে পড়েছে এই শিল্প। তারা বলছেন, দেশীয় পণ্যের গুণগত মান ভালো। পণ্য ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুকি ও কম। ক্রেতাকে দেশীয় প্রসাধনীর দিকে ফেরাতে ও দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে বিদেশী প্রসাধনীর আমদানি নীতি আরো কঠোর করা প্রয়োজন।
রাজধানীর বিভিন্ন প্রসাধনী পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা যায় দোকানে দেশীয় প্রসাধনীর উপস্থিতি কম। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা কম থাকায় তারা দেশী প্রসাধনী তারা দোকানে রাখছেন না। বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল আজীম আগামীনিউজকে জানান, এক সময় তাদের সব দেশীয় প্রসাধনী থাকতো। তবে সময়ের বিবর্তণে তা হারিয়ে গেছে। তিনি বলছেন, বিদেশী প্রসাধনীর চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রলোভিত হয়ে তারা বিদেশী পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন।
বিদেশি প্রসাধনী পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিভাইন ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক তাহফিমুল হক আগামীনিউজকে বলেন, প্রসাধনী পণ্যগুলোর অনেক কিছুই বাংলাদেশে তৈরি হয় না। ফলে বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। আবার দেশী পণ্য গুলো বিদেশী পণ্যের সাথে কঠোর প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।
বিদেশি পণ্যের প্রতি মানুষের এক প্রকার দুর্বলতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও মানুষ এসব পণ্য কিনছে।
সংশ্লিষ্টারা বলছেন, গণমাধ্যমে অন্তর্জালে বিরতিহীন চটকদার বিজ্ঞাপন ও প্যাকেজিং আর বিপনন কৌশলে আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা। আর এই কারণে একই মানের দেশি পণ্যের বাজার পড়ে গেছে।
তারা বলছেন, অন্যদিকে বিদেশী কোম্পানির পণ্য গুলো সব খানে পাওয়া যাচ্ছে। দাম ভোক্তার নাগালে রাখা হচ্ছে। এ কথায় চিন্তা মনে ভোক্তাদের বিদেশী পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সদস্য পারভেজ বলেন, দেশীয় উদোক্তাদের মূলধন কম তারা বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে পেরে উঠবে কি করে।প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে না পেরে কেউ ব্যবসায় লোকসান দিচ্ছে আবার কেউ ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের আমদানি নীতির শিথিলতার সুযোগে বিদেশী পণ্যগুলো বাজার দখল করছে। দেশী শিল্প উদ্যোক্তাদের রক্ষার্থে প্রয়োজন সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ। এক্ষেত্রে বিদেশী প্রসাধনী পণ্য আমদানি ক্ষেত্রে নীতি ও কঠোর হতে হবে।
আগামীনিউজ/মিঠু/মিজান