ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে লেনদেন বাড়ছে। এজন্য দেশের সবচেয়ে বড় সার্ভিস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশে লেনদেন করতে গ্রাহকরা অসুবিধায় পড়েছেন। ফলে, একদিকে যেমন মোবাইলে লেনদেনে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়ছে তেমনি এজেন্টদের কাছে টাকা না থাকার কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তবে, বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, জরুরি সেবার তালিকায় বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবাটিকে রাখলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশ্নেরমুখে কিছু জায়গায় ডিস্ট্রিবিউটরদের যেতে সমস্যার কারণে সাধারণ মানুষের সাময়িক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি সাময়িক, আগামীতে এমন সমস্যা থাকবে না।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) এর এজেন্ট হয়ে থাকে। তাদের ব্যবসায় বিনিয়োগ খুব কম থাকার কারণে প্রতিদিন ক্রেডিট রিচার্জ করতে হয়। করোনা কালের আগে সাধারণত ৫০ হাজার বা এক লক্ষ টাকা প্রতিদিন বা একদিন পর পর রিচার্জ করে ব্যবসা করত। কিন্ত বর্তমান প্রেক্ষিতে ওই পরিমান টাকা রিচার্জ করলে নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। ফলে, যে মানুষ বা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজন বা বেতন দেওয়ার জন্য টাকা পাঠাইতে গেলে দিতে পারছেন না। এরফলে, টাকা না পেয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানিতে পড়ছেন। অন্যদিকে, এজেন্টরা গ্রাহকদের নিকট আস্থার সংকটে ভুগছেন।
এজেন্টরা জানিয়েছেন, তারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের কাছে নগদ টাকা দিয়ে দুই তিনগুন বেশী ক্রেডিট লিমিট রাখা সম্ভব হয়না। যতটুকু থাকে তা দ্রুতই ফুরিয়ে যায়। আবার চাহিবামত্র ডিস্ট্রিবিউটরদের পাওয়া যায়না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক বিকাশ এজেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে আগামীনিউজক বলেন, আমরা ক্ষদ্র ব্যবসায়ী আমাদের এতো টাকা নেই। এর উপর আজ থেকে ডিস্টিবিউটাররা আসবেনা। আর আমাদের পক্ষে একদিনে চাহিদার অনুপাতেও ক্রেডিট রাখা সম্ভব হয়না। অনুরুপ কথাই বলেন মহাখালীর ডিওএইচএস এক বিকাশ এজেন্ট।
তিনি আরো বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ এই করোনাকালে আমাদের বাকীতে ক্রেডিট দিত তবে আমরাও এই করোনাকালে ডিজিটাল আর্থিক সেবা দিয়ে জনগনের পাশে দাঁড়াতে পারতাম।
বিকাশ কর্তৃপক্ষ এজেন্টদের অসুবিধার বিষয়ে একমত। বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম আগামীনিউজকে বলেন, আমাদের এজেন্টদের লেনদেনে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের ডিস্ট্রবিউশন চ্যানেলের লোকরা এজেন্টদের নিকট সহজেই পৌঁছাতে পারছেন না। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১২ এপ্রিল একটি সার্কুলার দিয়েছেন এই সেবাকে ''জরুরি' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্ত এই নির্দেশনা মানছেন না স্থানীয় প্রশাসন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নিরবিচ্ছিন্নভাবে এজেন্টদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ থাকলে এমন অসুবিধা হবে না। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অনুরোধ করি 'জরুরি সেবা' হিসেবে আমাদের ডিস্ট্রিবিউটরদের সহায়তা করুন। আমরা এই মহা সংকটে জণগনের পাশে থাকতে চাই।
লোকাল এজেন্টদের ক্রেডিট সুবিধা দেওয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলেই এমন সুবিধা দিতে পারলে ভালোই হত। কিন্ত আমাদের যান্ত্রিক সিস্টেমের কারণে তা পারছি না। এটা করতে গেলে পুরো সিস্টেম চেঞ্জ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হবে।
আগামীনিউজ/ইমরান/মিজান