যার সনে যার মন বাঁধা
নয়ন বাঁধা যার রুপে
সে কি তারে ভুলতে পারে,
একেবারে সে গেছে ডুবে।
চন্ডীদাস আর রজকিনী,
বিলম্ব মঙ্গল চিন্তামনী,
তারা প্রেমের শিরোমনি,
মিশে গেছে ভাবে ভাবে।
এক রশিতে দুজন বাঁধা,
কখন হাসা কখন কান্দা,
মনোমোহন হল আঁধা
পিঁপড়ায় খাইল গুড়ের লাভে।
প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যাঃ
মানুষ যখন প্রজ্ঞাবান হয় তখন তার চিন্তা চেতনা সঠিক পথে পরিচালিত হয়। তাঁর জীবন দর্শনের প্রতিটা কর্ম এবং চিন্তার মধ্যে যথার্থতা থাকে। সঠিক প্রজ্ঞার কারণে তার চিন্তা চেতনার মধ্যে কোন হের ফের হয় না। সাধারণ মানুষ বস্তুলোভে পরিচালিত হয় সে কারণে তার বস্তুমুখী চিন্তার অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। মাঝে মাঝে সঠিক আবার মাঝে মাঝে বেঠিক মনে হয়। এই সব পার্থক্য মানুষের বস্তুময় পার্থক্যের বিবেচনায়। সে কারণে বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট ব্যক্তির কোন কর্মকেই বিশ্ব প্রকৃতির বিচারে সঠিক হিসেবে বিবেচিত হয় না। তার সকল কর্মের মধ্যে অজ্ঞানতার ছাপ রয়ে যায়। কোন সত্ত্বা যখন কোন প্রজ্ঞাবান সত্ত্বার নির্দেশ মোতাবেক সাধনার মাধ্যমে নিজের মধ্যে প্রজ্ঞার শক্তি অর্জন করে তখন তার মধ্যে সঠিক নির্দেশনার জ্ঞান সৃষ্টি হয়। তিনি তার সৃষ্ট প্রজ্ঞার মাধ্যমে বুঝতে পারে সঠিক জীবন দর্শন কোনটি। তখন সে নিজের মনের মধ্যে যে বস্তুর লোভ, দ্বেষ ও মোহ থাকে তাকে ধরতে পারে। সে এই পর্যায়ে বস্তু চিন্তা থেকে নিজেকে রক্ষা করে। সে তখন তার প্রজ্ঞার মাধ্যমে নিজের মনের উপর বিজয় অর্জন করে। তখন তার চিন্তা চেতনার উপর প্রজ্ঞার শক্তির নিয়ন্ত্রণ আসে। তখন মন তাকে কোন অবস্থাতেই আর বস্তুর মধ্যে নিমজ্জিত করতে পারে না।
মানুষের ভালোবাসা বস্তুমুখী। এই সব ভালোবাসার মধ্যে বস্তুর আকর্ষণ মূলে কাজ করে। কিন্তু প্রজ্ঞাবান সত্ত্বার ভালোবাসা তার দর্শনের সাথে সংমিশ্রিত। তার জীবনে কোন সত্ত্বার সাথে মিশে যাওয়ার জন্য তার প্রতি বস্তুহীন দর্শন মিশ্রিত ভালোবাসা আছে। সেই ভালোবাসার মধ্যে কোন প্রাপ্তির আকর্ষণ নেই। প্রেমের মাধ্যমে তার অর্জিত শক্তির দ্বারা অনন্ত শক্তির সাথে মিশে যাওয়ায় তার সকল প্রচেষ্টায় একমাত্র লক্ষ্য।