ঢাকাঃ হঠাৎ করেই শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীতে চোখে পড়ছে না গণপরিবহন। আর রিকশা-অটোরিকশা পাঠাও মোটরসাইকেল পাওয়া গেলেও ভাড়া গুনতে হচ্ছে কয়েকগুন বেশি।
জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে বাস-ট্রাক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে অবরোধ ডাকা হয়েছে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীতে সাধারণ মানুষকে পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
এদিকে প্রায় সব ছুটির দিনেই নিয়োগ পরীক্ষা থাকে। সারাদেশে থেকে আগের দিন পরীক্ষার্থীরা এ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছুটে আসেন ঢাকায়। আজ সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বের হয়ে রাস্তায় তেমন যানবাহন না থাকায় তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৯টায় রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে যানবাহনের অপেক্ষায় ছিলেন লালবাগের বাসিন্দা শম্পা আক্তার। রাস্তায় তেমন যানবাহন না থাকায় পড়েছেন ভোগান্তিতে ।
শুধু শম্পা আক্তার নন, তার মতো অসংখ্য শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন। তবে গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন সিএনজি, মোটরসাইকেল ও রিকশাচালকরা।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ছিল। এছাড়া ১৯টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষাও ছিল এদিন। ফলে সকাল থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী এবং সাধারণ মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে রাস্তায় নামেন।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভাড়াচালিত মোটরসাইকলে এবং রিকশাচালকরা দাঁড়িয়ে আছেন। যানবাহনের তুলনায় যাত্রী বেশি হওয়ায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ভাড়া চাইছেন তারা।
সিএনজিচালক মনোয়ার হোসেন বেশি ভাড়া চাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘যাত্রীরা বাস ভাড়ার সঙ্গে সিএনজির ভাড়ার তুলনা করছেন। এটা তো হয় না। তার ওপর আজ ধর্মঘট।’
নীলক্ষেত মোড়ে দায়িত্বে থাকা একজন ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
হায়াত মাহমুদ নামে একজন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘সকাল থেকে ভালো আয় হচ্ছে। আজ ভাড়াও একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের প্রথম পছন্দ মোটরসাইকেল।’
পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বলছেন, হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও ভাড়া সমন্বয় করা হয়নি। ভাড়া বাড়ানো না হলে তারা রাস্তায় পরিবহন নামাবেন না।
বুধবার (৩ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে ভাড়া বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ঘোষণা ছাড়াই শুক্রবার সকাল থেকে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।
তবে তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম না কমানো পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম।
আগামীনিউজ/শরিফ