ঢাকাঃ আগামী দেড় মাসের মধ্যে পরীমণি, হেলেনা জাহাঙ্গীর, জিসান, নজরুল ইসলাম রাজ, মিশু হাসানদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৫টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন একে একে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সিআইডি প্রধান বলেন, আমরা ১৫টি মামলার তদন্ত করছি। প্রতিটি মামলার মোটিভ, গতি-প্রকৃতি আলাদা। মামলার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ সাক্ষী-আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা, আলামত সংগ্রহ ও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা। তবে মাদক মামলার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফরেনসিক ও কেমিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। সেগুলো আমি করতে দিয়েছি। আসামি ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ আমাদের প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সিআইডি প্রধান বলেন, ফরেনসিক প্রতিবেদন পেলেই এই ১৫ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা শুরু করতে পারব। আমরা আশা করছি আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিল করা শুরু হবে।
সিআইডির প্রধান আরও জানিয়েছেন, আসামিদের অপরাধলব্ধ আয় আছে কি না, সেটিও যাচাই–বাছাই করছে সিআইডি। বেশ কয়েকজন আসামির আর্থিক হিসাব জানার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে তিন দফা রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন প্রসঙ্গে সিআইডির প্রধান সাংবাদিকদের আরও বলেন, প্রথমবার আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। দিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে কিন্তু তাকে আর রিমান্ড চাওয়া হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া কিছু তথ্য মেলানোর প্রয়োজন ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আবারো রিমান্ডে চাই। সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে ভুলের ঊর্ধ্বে থাকতে চায়। তাই তদন্তের প্রয়োজনেই সব করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব মামলার আসামিরা ছাড়াও তদন্তের প্রয়োজনে অনেককে ডেকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আপাতত আর কাউকে ডাকার পরিকল্পনা তাদের নেই।
গত ২৯ জুলাই গুলশানের বাসা থেকে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তার করার কথা জানায় র্যাব। এরপর ১ আগস্ট বারিধারা ও মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে শরফুল হাসান ও মাসুদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
৪ আগস্ট পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। একই দিন প্রযোজক নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এসব মামলায় আদালতের অনুমতি নিয়ে চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ অন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও হেলেনা জাহাঙ্গীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।