ঢাকাঃ জেলার নবাবগঞ্জের বাহ্রা ইউনিয়নের মাইলাইল গ্রামে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সড়ক উন্নয়ন হয়নি। গ্রামের দুটি মাত্র সড়ক তাও করুণ দশা। এলাকাবাসী জানান, গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিলাশবহুল বাড়ি হলেও আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেনি। প্রধান সড়কের এমন অবস্থা অটো পর্যন্ত আসতে চায় না। বৃষ্টি হলে কাঁদা-মাটিতে পিচ্ছিল হয়ে পায়ে হেটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
সরেজমিন পরিদর্শনে এলাকাবাসী জানান, গ্রামের দুটি সংযোগ সড়কের একটি কোমরগঞ্জ বাজার থেকে অপরটি আগলা বাজার থেকে যুক্ত হয়েছে। দুটি সড়কের দুরত্ব তিন কিলোমিটার।
কোমরগঞ্জ মাঠ হয়ে পূর্বদিকের ব্রীজ পাড় হয়ে দক্ষিণ মাইলাইল ইটভাটা পর্যন্ত সড়কটির সুবেদুজ্জামান সুবেদের বাড়ি হয়ে চরকান্দি বাদশার বাড়ি তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত আধা কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে। বাকি সড়ক সম্পূর্ণ কাঁচা। এর মাঝে মাইলাইল পাপ্পুর পোল্ট্রি ফার্ম এলাকায় মাঝে মাঝে রাস্তা আটকে দেয়া হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। রাস্তা বন্ধ থাকলে বাদশার বাড়ি তিন রাস্তার মোড় হয়ে আগলা চকবাড়ি দিয়ে দুই কিলোমিটার ঘুরে দক্ষিণ মাইলাইল গ্রামে আসতে হয়।
অপরদিকে, আগলা বাজার থেকে চৌকিঘাটা ধলু কোম্পানীর পুকুর পর্যন্ত আরসিসি পাকা রাস্তা রয়েছে। ওখান থেকে লেবন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। দক্ষিণ মাইলাইল ইটভাটা পর্যন্ত বাকি রাস্তায় চলাচলে এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দক্ষিণ মাইলাইল গ্রামের শেখ আসলাম জানান, ১২ বছর আগে কিছু অংশের ইট সোলিং করা হয়েছিল। যা মাটির সাথে মিশে গেছে। সড়কের আগলা চকবাড়ি এলাকায় একটি মাত্র বক্স কালভার্ট। তারও রেলিং খসে পড়ে জীর্ণ দশার সৃষ্টি হয়েছে। দেখি নবাবগঞ্জে কতো গ্রামের উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের কপালে দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই জুটছে না।
একই এলাকার আতাউদ্দিন, ইয়াছিন জানান, রাস্তার এমন অবস্থা মাঝে মাঝে রিক্সা, অটো উল্টে যায়। কাঁদা চাকায় জড়িয়ে গেলে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি আনতে হয়। তাই এ গ্রামে রিক্সা, অটো আসতে চায় না। ছেলে মেয়েরা তিন কিলোমিটার পায়ে হেটে স্কুলে যায়। গর্ভবতী, বয়স্ক ও শিশুদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
ঐ গ্রামের যুবক, এ বছরের এসএসসি পরিক্ষার্থী ওমর ফারুক জানান, আমাদের গ্রামের শিক্ষার্থীদের কষ্ট করেই লেখাপড়া করতে হয়। গ্রামের দুই দিকেই তিন কিলোমিটার পথ। হয় গ্রাম থেকে কোমরগঞ্জ হয়ে বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। না হয় আগলা চৌকিঘাটা জনমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়। এ থেকে পরিত্রাণ কবে পাব জানি না।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আব্দুল রহিম জানান, আমাদের গ্রামের প্রায় বাড়িগুলো পাকা ও দৃষ্টিনন্দন। বিদ্যুৎও আছে কিন্তু সড়কের অবস্থা যা তা খারাপ। ভোট আসলে, এলাকার মানুষ ভোট দিতে চায় না।
নবাবগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী তরুণ কুমার বৈদ্য বলেন, রাস্তার সার্বিক খোঁজ নেয়া হবে। এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।