কথা ছিলো বাংলাদেশে নিজ পরিবারের কাছে ফিরবেন, কিন্তু দেশের উদ্দেশ্যে বিমানে ওঠার দিনই ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেলো সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক বাংলাদেশির।
তার নাম মোক্তার হোসেন (৪০)। তিনি ‘ওভারঅল’ নামে একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানায় ড্রয়িং ইঞ্জিনিয়ার পদে কাজ করতেন। বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার পাইকপাড়া গ্রামে। পিতা আলাউদ্দিন শেখ ও মাতা মমতাজ বেগম।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকালে সিঙ্গাপুরে শ্রমিকদের থাকার জায়গা ‘ব্লু স্টার ডরমিটরি’র গোসলখানায় ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।
মোক্তারের রুমমেট কুতুবউদ্দিন বলেন, রাত তিনটার সময় আমি তাকে মোবাইলে কথা বলতে দেখেছি৷ এরপর আমি ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুম থেকে জেগে দুপুরে টয়লেটে গেলে বাথরুমে ট্যাপের পানি পড়ার শব্দ পাই। তখন ভেবেছিলাম সে হয়ত গোসল করছে৷
‘আমি বাইরে থেকে তাকে ডাক দিয়ে কোন সাড়া না পেয়ে সুপারভাইজারকে ফোনে ব্যাপারটা জানাই। সুপারভাইজার আমার রুমে আসে৷ দুইজন মিলে ডাকাডাকি করেও তার সাড়াশব্দ পাই না। তারপর আমরা ডরমিটরির সিকিউরিটিকে কল দেই। সিকিউরিটি এসে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখেন তার গলায় দড়ি৷ সিকিউরিটি পুলিশকে কল দেয়।’
কুতুবউদ্দিন জানান, পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে দেখে তার গলায় দড়ি বাঁধা। তার নিথর দেহ ঝুলছে। দড়ি কেটে দেহ নামিয়ে এনে দেখে তার কোমরে মোবাইল গোঁজা৷ ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মোক্তার হোসেন ১৮ বছর ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী৷ সাত ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়৷ ৪ বছর আগে বিয়ে করেছেন।
মোক্তারের রুমমেট কুতুবউদ্দিন আরো জানান, গত কয়েকমাস ধরে মোক্তার অসুস্থ ছিল, মাসে ৮ থেকে ১০ দিন কাজ করতে পারতো৷ অন্য দিনগুলোতে বাসায় বিশ্রাম নিতো। কাজ করতে না পারার কারণে অল্প বেতনে নিজের চলতেই কষ্ট হতো৷ তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে যাবে৷ দেশে গিয়ে কিছু করার চিন্তা-ভাবনা করেছিলো।
এ ব্যাপারে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর আতাউর রহমান বলেন, ‘ডাক্তারি রিপোর্ট এখনও আমরা হাতে পাইনি। তবে ডরমিটরি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে উনি আত্মহত্যা করেছেন৷ অফিসিয়াল সব কাগজপত্র রেডি হলেই আমরা মোক্তার হোসেনের লাশ দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব৷’
আগামীনিউজ/হাসি