বিএনপির সব নেতাই নির্বাচন করতে চান : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৩১, ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ বিএনপির সব নেতাই নির্বাচন করতে চান মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি যদি অংশগ্রহণ না করে তাহলে বহু ‘উকিল আব্দুস সাত্তার’ দলটি থেকে বেরিয়ে আসবে।

সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) আমন্ত্রণে সফররত বিদেশি পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের কিছু সদস্য অংশ নিতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা বলেছেন। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির সব নেতাই নির্বাচন করতে চান। অথচ দলটি তাদের সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর পদেও নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচনও করতে দিচ্ছে না। মানুষ যদি দলটিতে থেকে নির্বাচনই করতে না পারে...। তাদের সবাই নির্বাচন করতে চায়। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে যার বহিঃপ্রকাশ দেখেছি। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা উকিল আব্দুস সাত্তারকে দেখেছি। এ রকম বহু উকিল আব্দুস সাত্তার আগামী নির্বাচনে বেরিয়ে আসবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যবেক্ষক দল জানতে চেয়েছে আগামী নির্বাচন করার লক্ষ্যে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশনের কী পরিস্থিতি। সেগুলো নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, আমি তাদের জানিয়েছি, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকার শুধু ফেসিলিটেটরের (সাহায্যকারী) ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর সরকারের আসলে মাঠ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রশাসন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেগুলো নির্বাচন কাজে ব্যবহৃত হয় তাদের ওপরে সরকারের কোনো কর্তৃত্ব থাকে না। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত সরকার কোনো কর্মকর্তাকে ট্রান্সফার করতে পারে না, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমি তাদের এগুলো বলেছি। তারা বুঝতে পেরেছে সরকারের ভূমিকা গৌণ। তখন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা হচ্ছে মুখ্য। নির্বাচন কমিশন সাম্প্রতিক সময়ে দেখাতে সমর্থ হয়েছে যে তারা শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।

‘যেমন গাইবান্ধার নির্বাচন সরকারি দলের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন বাতিল করেছেন। আপনারা জানেন, দেশে যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনগুলো হয়েছিল সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়েছে এবং ভোটারদের অংশগ্রহণও ৫০ শতাংশের বেশি হয়েছে। সেখানে একটি প্রার্থীর গায়ে ঘুষি লেগেছিল,সেটি সমীচীন হয়নি। ঘুষি লাগার পর যে ঘুষি দিয়েছে তাকে এবং তার আশেপাশে যারা ছিল তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এছাড়া ঢাকা-১৭ আসনে একজন প্রার্থীকে হেনস্তা করা হয়েছিল। সেটি নির্বাচন কেন্দ্রের বাইরে, বরিশালে ঘটনাটিও নির্বাচন কেন্দ্রের বাইরে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় যে বিষয়টি উঠে এসেছে, এগুলো ছোট ঘটনা, এত বড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুবই কম। ফ্রান্সে ভায়োলেন্স প্রটেস্ট হয়, ইউরোপে প্রটেস্ট হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন হওয়ার পর সেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সে তুলনায় আমাদের দেশে দুটি ঘটনা, যেগুলো গণমাধ্যমে অনেক ফুলিয়ে ফাঁফিয়ে কেউ কেউ দেখিয়েছেন। আমাদের বিরোধীদল সেগুলো নিয়ে অনেক সোচ্চার হয়েছে। একটি ঘুষিকে কেন্দ্র করে বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি না? এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।

‘আমার ধারণা তারা বুঝতে পেরেছে যে, বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের অধীনে বর্তমান সংবিধানের আলোকে একটি অবাধ সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।’ যোগ করেন আওয়ামী লীগর এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

পর্যবেক্ষক দল বলেছে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের কিছু নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির বেশিরভাগ নেতাই নির্বাচন করতে চান, বিএনপি এমন একটা দল কাউকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার পদেও নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছে না। কিন্তু দলের মধ্য থেকে নির্বাচন করতে না পারলেও তাদের সবাই নির্বাচন করতে চান। সেটির বহিঃপ্রকাশ আমরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেখেছি। উকিল আব্দুল ছাত্তারকে দেখেছি। এরকম বহু উকিল আব্দুল ছাত্তার আগামী নির্বাচনে বেরিয়ে আসবে।

ঢাকা-১৭ আসনে একজনকে মারার পর ১২ রাষ্ট্রদূতসহ ১৩ জন বিবৃতি দিয়েছিলেন, কিন্তু শনিবারের ঘটনা নিয়ে কোনো বিবৃতি নেই, এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি ভালো তো। দেশে কোনো কিছু ঘটলে সেটি নিয়ে বিবৃতি দেওয়া সেটা সমীচীন নয়। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করেছে।

‘আমি ভারতে কথা বলি, ভারতের মনিপুরে গন্ডগোল হচ্ছে, সেটার পর ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শুধু একটি মন্তব্য করেছিলেন। এরপর ভারতের রাহুল গান্ধীসহ সব দল বলেছে, এটা তুমি বলতে পারো না, কারণ এটা আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর আমাদের দেশে বিরোধীদল গিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরে কিছু একটা বলতে বলে। এটাই হচ্ছে ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

বুইউ