ঈদে নিজ জেলা-গ্রামে নিরাপদ ছিল না মানুষ : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ২, ২০২৩, ০২:০৬ পিএম

ঢাকাঃ ঈদে মানুষ ঘরমুখো হলেও নিজ জেলা-গ্রামে তারা নিরাপদ ছিল না বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ তাদের নানা সহযোগী সংগঠনের সমন্বয়ে জনপদের পর জনপদে সন্ত্রাসের আতঙ্ক বিরাজ করছিল। ফলে মানুষ বাড়িতে ফিরেও স্বস্তিতে ছিল না।

রোববার (২ জুলাই) দুপুর ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, অশুভ রাষ্ট্রশক্তির দৌরাত্ম্য সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্য আচরণ আজ বিপন্ন। অবৈধ শাসনের তীব্র কষাঘাতে আজ জনগণের জীবন মরণের প্রশ্ন। তারা (ক্ষমতাসীন) হিংসা-প্রতিহিংসার পথে এগোতেই ভালোবাসে।

তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা এতটাই ভেঙে পড়েছে যে পদে পদে মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। ঈদের ছুটিতে প্রায় ৩৫ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতির কারণে। তারা বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সামাজিক অবক্ষয় এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, ক্ষমতার আশ্রয়প্রশ্রয়ে গড়ে ওঠা দানবদের আক্রমণে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। বিশেষ করে এই সমাজে নারীদের জীবনের যেন কোনো মূল্যই নেই। এমনই এক দুঃসময় চলছে যখন বোনকে উত্ত্যক্ত করায় বিচার চাইতে গিয়ে তরুণ খুন হয়। পিতা-মাতা নিজের মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের কবলে পড়ে জীবন হারায়। প্রতিনিয়ত নিজের বোন বা কন্যা সন্তানের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে প্রচণ্ড নাজেহালসহ জীবন দিতে হয়। তাদের ছত্রছায়ায় জেলায় জেলায় গড়ে উঠেছে বখাটেদের উৎপাত।

রিজভীর দাবি— আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শুধু বিরোধী দলের কর্মসূচিকে বানচাল করা, সহিংস আক্রমণ চালানো, বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও স্বাধীন মতপ্রকাশকারীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলেই আজ সমাজে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে।

কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জড়িত থাকায় সব জায়গার সিন্ডিকেট প্রচণ্ড শক্তিশালী। যে কারণে ভারতে কাঁচা মরিচের কেজি ২৫ টাকা অথচ কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিলেও সিন্ডিকেটের কারণে দেশে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। কোথাও কোথাও ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি। এহেন সিন্ডিকেশন শুধু অনাচার মূলক সরকার থাকলেই সম্ভব। তারা মানুষের ক্ষুধা নিয়ে তামাশা করে।

এ সময় কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমানের ঈদ পরবর্তী গণসংযোগকালে হামলার অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়াও গত ১ জুলাই ভোলার দৌলতখানে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সঞ্জীব মৃধা ও যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনের ওপর হামলা, কুমিল্লার লাকসামে নেতাকর্মীদের ডিবি পুলিশের পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল ও তারিকুল আলম তেন জিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বুইউ