নির্বাচন কমিশনকে মির্জা ফখরুল

‘ইভিএম বন্ধ করুন, প্রয়োজনে ভোট পেছান’

জানুয়ারি ২২, ২০২০, ০৭:২৮ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা : ইভিএম ভোট গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করে তা বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোট নেওয়ার জন্য প্রয়োজনে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে গুলশানে হোটেল লেকসোরে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (অ্যাব) এর এক উদ্যোগে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ইভিএমের কারিগরী অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল কারচুপির সম্ভাব্য সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানান তিনি। 

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে। আরেকটি ১ ফেব্রুয়ারি আসছে, যে পদ্ধতিতে ঢাকার নগরবাসীর ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। আমরা তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছি, এখনও বলছি, এই ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখুন এবং প্রয়োজনে ভোট পিছিয়ে দিয়ে ব্যালটে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এদেশের মানুষ আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না।’

ইভিএমের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আজকে সবাই জনগণের কাছে বলি যে, তারা তাদের ভয়েস, তাদের কণ্ঠকে সোচ্চার করুন যে, আমরা ইভিএম মানি না। ইভিএম কখনোই জনগণের সঠিক রায়ের প্রতিফলন ঘটাবে না। আমরা এই ইভিএম প্রত্যাখান করছি।

কেনো ইভিএম পদ্ধতির বিরোধিতা করছে তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, মেশিন ব্যবহৃত হয় মানুষের দ্বারা। মেশিনের পেছনে কারা থাকবেন সেটা একটা জরুরি প্রশ্ন। যেহেতু এই মেশিনের পেছনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন আছেন এবং এই সরকার রয়েছে যারা পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে পরিচালনা করছে তাদের ওপরে মানুষের কোনো আস্থা নেই। এবারের দুই সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচনটা ইভিএম দ্বারা ভোট গ্রহণ করা হবে। আমরা প্রথম থেকে এর আপত্তি জানিয়ে আসছি। নির্বাচন কমিশনেও আমাদের ডেলিগেশন গিয়েছিল তারা গিয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছেন। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মঙ্গলবার আমাদের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ওপর সরকারি দলের একজন কাউন্সিলর প্রকাশ্যে আঘাত করলেন, তার ওপর আক্রমণ চালালেন।

দুঃখজনকভাবে শুধু না, দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জ্বাজনকভাবে ওই দলের (আওয়ামী লীগ) মেয়র প্রার্থী বললেন, এটা তাদের দলের নিজস্ব প্রোবলেম। ভেরি শেইম, দুর্ভাগ্যজনক। এরকম একজন ব্যক্তি যিনি এই কথা বলতে পারেন তার তো মেয়র হওয়ার কোনো যোগ্যতাই থাকতে পারে না।

বিচার ব্যবস্থাকে ধবংসের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির জন্য যে বিচার আরেক ব্যক্তির জন্য সেরকম বিচার নেই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় দুই বছর আটকিয়ে রাখা হয়েছে। যে জামিন তিনি পাওয়ার যোগ্য, যেটা আমার সংবিধানের মধ্যে আছে সেই জামিনও তাকে দেওয়া হচ্ছে না শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে।

সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সাল আলীমের নেতৃত্বে ড. এসএম আবদুর রাজ্জাক, আশরাফউদ্দিন বকুল, তানবিরুল হাসান, আসাদুজ্জামান ও মিজানুর রহমানসহ নিয়ে একটি টিম। সেমিনারে তথ্য চিত্র্রের মাধ্যমের ইভিএমে ভোট কারচুপির নানা দিক উপস্থাপন করা হয়।

অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সেলিম ভুঁইয়া বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, এবিএম মোশাররফ হোসেন, জহির উদ্দিন স্বপন, শাম্মী আখতার, আশরাফউদ্দিন বকুল, নেওয়াজ হালিমা আরলী, কাদের গনি চৌধুরী, শামীমুর রহমান শামীম, জেবা আমিনা খান, হাসান জাফির তুহিন, রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম মিঞা, ডা. আবদুস সেলিম, শায়রুল কবির খান, প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন, মিয়া মো. কাইয়ুম, অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আলমগীর হাছিন আহমেদ।

এছাড়া যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার কুটনীতিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরআর/এএম