খালেদা জিয়ার অবস্থা পর্যালোচনায় বিকেলে বসছে মেডিকেল বোর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৩, ২০২২, ০৩:২৫ পিএম

ঢাকাঃ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসবে।

আজ সোমবার (১৩ জুন) বিকেল ৫টায় এই বৈঠক হবে। পরে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফ করা হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুক্রবার (১০ জুন) রাত ৩টা ২০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে জরুরিভিত্তিতে এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুরে অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে এনজিওগ্রাম করা হলে ব্লক ধরা পড়ায় সেখানে রিং পরানো হয়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্ট অ্যাটাকের পর বর্তমানে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রোববার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, শনিবার বেলা দুটা থেকে খালেদা জিয়াকে ৭২ ঘণ্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত উনি শারীরিকভাবে যে অবস্থায় আছেন, ডাক্তারদের বক্তব্য হলো, ৭২ ঘণ্টা না গেলে কোনো কমেন্ট করা ঠিক হবে না। সেজন্য তাঁরা কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছেন।

সিসিইউতে খালেদা জিয়াকে কার্ডিওলজিস্টদের পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামের হার্টে এনজিওগ্রাম করার পর তিনটা ব্লক পাওয়া যায়। একটা ব্লক মেইন গ্রেট ভেসেল, যেটা লেফট সাইডে, সেটায় মোর দ্য ৯৯ শতাংশ ব্লক ছিল। সেটিতে এনজিওগ্রাম করার পর রিং পরানো হয়।

এই চিকিৎসক বলেন, বাকি দুটি ব্লকের মধ্যে একটির অবস্থা ৬০ শতাংশ বেশি অপরটি ৪৫ শতাংশ। এ দুটি ব্লক নিয়েও চিন্তিত আছি। আচরণ কেমন হবে তা এখন বলা মুশকিল। বর্তমানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল খালেদা জিয়াকে দেখভাল করছে।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তার শরীরে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়। ২৮ নভেম্বর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই দিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে সেই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে দণ্ড স্থগিত করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ছয় মাসের জন্য সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এমবুইউ