নারায়ণগঞ্জঃ ২৮ মার্চ হরতাল ডেকে ছিলেন কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজত ইসলাম। ২৫ মার্চ নেতাকর্মীদের উজ্জিবিত করার উদ্দ্যেশে নারায়ণগঞ্জে এসেছেন। এই সহিংসতার পিছনে সরাসরি জড়িত ছিলেন মামুনুল হক। তাঁর পিছনে জাতীয় ও স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠী থাকতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তবে, সব কিছুই ক্ষতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।
পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হকদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার উচ্চাবিলাসিতা প্রতিয়মান হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ জায়েদুল আলম।
১৮ দিন রিমান্ডে থাকা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা বিভাগের মহাসচিব মামুনুল হক পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এসব কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে টাকা আসতো বলেও আমরা তথ্য পেয়েছি। বিভিন্ন দেশী ও আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ঠতা থাকার প্রাথমিক তথ্য আমরা পেয়েছি। তার কর্মকান্ডগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে।
রবিবার ( ৬ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে মামুনুল হকের রিমান্ড ইস্যুতে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে এসপি মোঃ জায়েদুল আলম এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআই এর পুলিশ সুপার মনিরুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, জাহেদ পারভেজ চৌধুরীসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ২৮ মার্চ দেশবাপী কথিত হরতালের নামে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত নাশকতার ঘটনা ঘটে। এরআগে ২৫ মার্চ মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জে আসেন। তার উসকানীমূলক বক্তব্য নাশকতায় সাহস যুগিয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন।
৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ঝর্ণা নামের একজন নারীসহ স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়ার ঘটনায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করলে সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে ওই নারী সোনারগাঁ থানায় এসে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এসব ঘটনায় দায়েরকৃত ৬টি মামলায় ৩ দিন করে মোট ১৮ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রথমে ৩টি মামলায় জেলা পুলিশ, পরবর্তিতে সিআইডি ও পিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার তাকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, আমরা তার দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে অচীরেই আদালতে অভিযোগপত্র দিতে পারবো বলে আশা করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, আমরা জেনেছি, তার ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ী ও সম্পত্তি রয়েছে। একাধিক মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসার কোন আয়-ব্যয় এর হিসাবের কোন কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। ধর্ষণ মামলায় জ্ঞিাসাবাদে বিয়ের কোন বৈধ কাগজপত্র বা তথ্য প্রমান দিতে পারেননি। শরিয়ত মোতাবে বা দেশের আইনী কাঠামো অনুসারে বিয়ের কোন তথ্য প্রমান দিতে পারেনি।
দেশী এবং বিদেশী বিভিন্ন জায়গা থেকে সে পর্যাপ্ত অর্থ উপার্জন বা আত্মসাত করেছেন বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে। রিমান্ডে মামুনুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিন তদন্তকারী সংস্থাকে নিয়ে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।