হুইপ সামশুল হকের কেলেঙ্কারি, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে পেটানোর হুমকি

‍নিউজ ডেস্ক মে ২৭, ২০২১, ০৩:১৬ পিএম

ঢাকাঃ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ৮০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদকে লুঙ্গি খুলে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ এবং চট্টগ্রামের পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। হুইপ, তার ভাই ও ছেলের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় হুইপের আক্রমণাত্মক হুমকির মুখে পড়েছেন তিনি। এছাড়াও তাকে লুঙ্গি খুলে বাজারে ঘোরানোর হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

অপমানিত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদ। হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘হুইপ ও তার পরিবারের লোকজন মানুষের ওপর জুলুম করে। এসব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমাকে তার রোষানলে পড়তে হয়েছে। আগে হুমকি দিত হুইপের ভাই মোহাম্মদ আলী নবাব। এখন হুইপ নিজেই হুমকি দিচ্ছেন। হুইপ কখন কী করে, তার কোনো ঠিক নেই। খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

সামছুদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘আসলে হুইপ সামশুল হক আওয়ামী লীগের লোক নন। তিনি জাতীয় পার্টি করতেন। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের ভেতর নালার ওপরে ছোট্ট একটি দোকান করতেন। সেখান থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে রাতারাতি পাল্টে গেছেন। বিশেষ করে সংসদ সদস্য এবং হুইপ নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। যেন রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি। তিনি আগে কী ছিলেন, আর এখন কী হয়েছেন, পটিয়ার মানুষ সবই জানে।’

হুইপের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সামশুল হক চৌধুরীর ভাইও এখানকার সব কাজে হস্তক্ষেপ করেন। হুইপ অবৈধ সব কাজ-কর্ম তাঁর ভাইকে সামনে রেখে করান। পটিয়ায় মাটি কাটা থেকে শুরু করে সব কাজে হুইপের ভাই নবাবকে টাকা দিতে হয়। সরকারি-বেসরকারি সব কাজেই টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে কাজ হয় না। এসব কারণে পটিয়ায় রাস্তাঘাটসহ সরকারি বিভিন্ন কাজ নির্ধারিত সময়ে হয় না। এক বছরের কাজ শেষ করতে দু-তিন বছরও লেগে যায়। এর কারণ হলো হুইপ ও তাঁর ভাইয়ের অত্যাচার। পটিয়ায় কোনো শান্তি নেই?। হুইপ সামশুল হক তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী পটিয়াকে চালাচ্ছেন। পুরো পটিয়াকে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন।

প্রসঙ্গত, মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদ ১৯৭২ সালে ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। ১৯৭৫ সালের পর হন পটিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০১০ সাল পর্যন্ত ছিলেন পটিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।