মনে হচ্ছে সরকার প্রাণ বাঁচাতে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াচ্ছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম

ঢাকাঃ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার অপরিসীম ক্ষমতায় আইনকানুন, নিয়মনীতি, সংবিধান, শৃঙ্খলা সবকিছু পদতলে পিষ্ট করে দেশে জংলি শাসন কায়েম করেছেন। তার বক্তব্য ভ্রান্ত ও মিথ্যা তথ্যের সমষ্টি ছাড়া কিছুই নয়। তাদের উদ্ভট কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে পেছন থেকে কেউ ধাওয়া করছে আর তারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে ঊর্ধ্বশ্বাসে।’

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের ভোটরঙ্গ ও ভোট গণনা শেষ না হতেই ডামি এমপিদের নামে গেজেট, শপথ গ্রহণ, মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা, মন্ত্রীদের শপথ– চারদিনেই অভাবনীয় দ্রুততায় বিশ্ব রেকর্ড করে ভেবেছেন বিপদমুক্ত হলেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে অস্থির। ভীতি-ত্রাসে তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতা নবায়ন করার অবৈধ শপথ নিতে গিয়ে আইনকানুন ও সংবিধানের কবর রচনা করা হয়েছে। এমনিতেই সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে শেখ হাসিনা ভাববিলাসী নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিশ্চিত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, তার মানে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যারা সংসদ সদস্য ছিলেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন।’

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে মিডনাইট একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি চরম সাংবিধানিক লঙ্ঘন। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে এসময়ের মধ্যে দ্বাদশ অবৈধ সংসদ বাতিল করে দিতে পারে উচ্চ আদালত। জনগণের প্রত্যাশার শেষ আশ্রয়স্থল আদালত তাদের যুগান্তকারী ভূমিকা নিতে পারে।’

রিজভী বলেন, ‘দেড় দশক ধরে দেশের ভোট বঞ্চিত মানুষের মৌলিক দাবি– নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার লুটেরা পারিষদবর্গ সংবিধানের দোহাই দিয়ে একটির পর একটি বিনা ভোট, নিশি ভোট, ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে দেশে জংলি আইনের শাসন কায়েম করেছে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি আবারও প্রমাণ চান ৩০০ সংসদীয় নির্বাচনী আসনে শুধু প্রার্থী আপনি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে সারা দেশে তারেক রহমান যদি আপনি শেখ হাসিনার চেয়ে দ্বিগুণ ভোট বেশি না পান, তাহলে কথা দিচ্ছি, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। শেখ হাসিনাকে বলছি, সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। দেশের অবিসংবাদিত নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় বন্ধ করুন।’

জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কর্মসূচি

১৯ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সেদিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রমনার ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা, শুক্রবার বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে পোস্টার এবং পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। দলের অঙ্গ, সহযোগী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি উপলক্ষ্যে নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভা ও শীতবস্ত্র বিতরণ করবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আলোচনা সভাসহ অন্য কর্মসূচি পালন করবে।

এমআইসি/