কুড়িগ্রামঃ গত কয়েকদিন থেকে কখনো টিপটিপ আবার কখনওবা মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। সারাদিন আকাশে মেঘ জমে থাকায় প্রকৃতি কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন।আলো অন্ধকারের এই খেলায় চোখ ছুঁয়ে যায় গাছে ফুটন্ত হলুদ রঙ্গের অলকানন্দা ফুলে।
বৃষ্টির পানিতে ভিজে ফুলের পাপড়ি গুলো যেন আরও সৌন্দর্য মন্ডিত হয়েছে। যদিও এই ফুলের গন্ধ নেই তবে গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে থাকা হলুদ রঙ্গের অলকানন্দায় সৌন্দর্যের কোন কমতি নেই ।
ফুলটির বিভিন্ন আঞ্চলিক নাম রয়েছে, দেখতে মাইকের মত বলে কেউ কেউ একে মাইক ফুল বলে, আবার কোথায় ঘন্টা ফুল কেউবা কলকি বা কলকে ফুল নামেও চেনে।
রাজীবপুর মডেল সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ক শিক্ষক শহীদুর রহমান বলেন, অলকানন্দা ফুলটির ইংরেজি নাম Allamandha Flower ‘অ্যালামন্ডা’ এছাড়াও আরও কয়েকটি ইংরেজি নাম আছে যেমন Golden Trumpet,Allamanda Vine ।
এর বৈজ্ঞানিক নাম Allamonda cathertica। এটি Apocynaceae পরিবারের অন্তরভূক্ত ফুল। হলুদ রঙের এ ফুলটিই আমাদের। দেশে বেশি দেখা যায়। গোলাপি, বেগুনি সহ আরও কয়েকটি রঙের প্রজাতি রয়েছে অলকানন্দা ফুলের।
তিনি আরও জানান, এই ফুলটি মূলত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালীন ফুল। তবে বর্ষার সময়ও ফুটতে দেখা যায়। ফুলটি ফোঁটার পর প্রায় দু সপ্তাহ পর্যন্ত সতেজ থাকে। গাছ ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুলটির আদি নিবাস ব্রাজিল।
অলকনন্দা গুল্ম জাতীয় পত্র ঝরা গাছ।গাছটি লতানো হওয়ার ফলে কোন শক্ত খুটি, দেয়াল অথবা বারান্দায় রেলিং এ দিলে সবচেয়ে ভালো হয়।শীতে কালে গাছের সমস্ত পাতা ঝরে যায় ও বসন্তের শেষ ভাগে গাছে নতুন পাতা গজায় এবং ফুলের কলির আগমন ঘটে।পাতার রঙ গাঢ় সবুজ । গ্রীষ্মের শুরুতে গাছে ফুল ফোটে এবং এর ফুল ফোটার সময়কাল হেমন্তকাল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বর্ষা ঋতুতে গাছে সবচেয়ে বেশী পরিমাণে ফুল ধরে। ফুল শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে একই সাথে দুই থেকে পাঁচটি পর্যন্ত ফুটতে একসাথে ফুটতে দেখা যায়।
ফুলগুলি গাঢ় হলদে রঙ্গের পাঁচটি পাপড়ি বিশিষ্ট। লতানো সবুজ পাতার নান্দনিক গঠনের কারনে সহজেই নজর কাড়তে বাধ্য হয় প্রকৃতি প্রেমীরা। এর কাণ্ড, পাতা ও ডাল ভাঙ্গলে সাদা রঙের আঠা বের হয়। বংশবৃদ্ধি করতে বীজ এবং কান্ডের কাটিং করলেও সেখানে থেকে নতুন গাছ জন্মায় বলেও জানিয়েছেন এই শিক্ষক।
অলকনন্দার ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে বলে জানা গেছে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় এর ফুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।