ঢাকাঃ অর্গানিক ফসল একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেতে হয়।
কোন জমিতে হঠাৎ করে দেশী বীজ, জৈব সার, জৈব কীট ও বালাইনাশক ব্যবহার করলেই ফসলটি অর্গানিক হবে না।
পরিবেশ ও প্রতিবেশ একটা বড় বিষয়।
মাটি, পানি, বাতাস, বীজ, সার, কীট ও বালাইনাশক সব কিছু ১০০% লোকাল ও জৈব হতে হবে।
১০০% জৈব মানে ১০০% ই হতে হবে।
গরুর গোবরই তো জৈব নয়। মাটিও জৈব নয়।
যথেষ্ট পরিমাণে রাসায়নিক আছে। আছে টক্সিন, আছে আরও অনেক হেভি মেটাল।
এগুলোকে রিমুভ করে ১০০% এনশিওর করতে পারলেই অর্গানিক ফুড প্রোডাকশন সম্ভব। এমন নয় যে কয়েক বছর মাটি খালি ফেলে রাখলেই তা অটোমেটিক রিমুভ হয়ে যাবে। রিমুভ করতে হবে প্রয়োজনীয় ফসল দিয়ে।
বিষয়টা অসম্ভব নয়।
তবে এতগুলো ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ করে বিশ্বের কতগুলো দেশের কতটুকু মাটিতে তা ফলানো সম্ভব ? এটাই বড় প্রশ্ন।
তাই অর্গানিক ফসল চাষ করতে আগ্রহী হলে প্রচুর পড়তে হবে। জানতে হবে তার চরিত্র ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। শিখতে হবে কৌশল। জানতে হবে নূন্যতম ১০০ বছরের বিশ্ব কৃষির ইতিহাস। জানতে হবে পরিবেশ ও প্রতিবেশ কি। শিখতে হবে পৃথিবী ও চাঁদের সম্পর্কে। আরও আরও অনেক কিছুই।
বিশ্বের যেসব দেশের মানুষ মিথ্যা কথা বলে না, ঐসকল দেশে অর্গানিক ফসলের মূল্য দেখলে চোখ কপালে উঠে।
কেননা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত ফসল, হতে পারে কেমিক্যালসহ বা কেমিক্যাল ফ্রি, তা চাষ করতে সময় প্রয়োজন তিন থেকে ছয় মাস। সেখানে অর্গানিক ফসল চাষ করতে প্রস্তুতিতেই চলে যায় কয়েক বছর। তা শেষে যে ফসল উৎপাদিত হবে, তার মূল্য নির্ধারণ হবে ঐ চাষীর কাজের সময় + খরচের উপর নির্ভর করেই। তাই সত্যিকারের অর্গানিক ফসলের মূল্য আর ট্রেডিশনাল ফসলের মূল্যে কোন তুলনাই করা সম্ভব নয়।
পাশাপাশি ঐ জৈব ফসল একজন মানুষের জন্য খাদ্য ও ঔষধ দুটোর সমন্বয়। ঔষধ বলতে যদি শুধু তার মূল্য ধরা হয়, তাও হবে না। ঐ অসুখের জন্য কি পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক কষ্ট পেতে হয়, তাও এড হতে হবে।
এগুলো দেখার জন্য বা জানার জন্য বেশী দুর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবন যাপনের খবর জানলেই বুঝতে পারবো। যার কিছুটা এখনো আমাদের হিল এরিয়ায় দেখা যায়। এখনো যারা গহীন জঙ্গলে থাকে, তাদের সুস্থতা সম্পর্কে খবর নিলেই বুঝা যাবে। তার মানে আবার এটাও নয় যে, আমাদের হিল এরিয়ার সবটাই এমন। পাহাড়ি এলাকায় চাষ করা সব ফসলই কিন্তু অর্গানিক নয়।
ফসল সবই প্রয়োজন। হয়তো সবগুলো ১০০% নিরাপদ নয়। এটার জন্য এককভাবে কেউই দায়ী নয়।
তবে আমাদের প্রয়োজন সত্য কথা বলা। দরকার সততা ও নৈতিকতার। চেষ্টা করলে আমরা অর্গানিক না হোক, নিরাপদ ও প্রাকৃতিক ফসল উৎপাদন করতে পারবো। পারবো খাদ্য থেকে মানুষের ক্ষতি কমাতে। পারবো সুস্থ্য জীবন যাপনের ব্যবস্থা করতে। পারবো সুস্থ্য সন্তান জন্ম দিতে। সুস্থ্য সবল চৌকশ জেনারেশন রেখে যেতে।
শিক্ষিত, সৎ , নৈতিক উদ্যোক্তাদের বুঝে, শুনে, শিখে এগিয়ে আসা প্রয়োজন এখনই।