ঢাকাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুরে ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ফোন ও ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ও এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিটু এক্স ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তুতির প্রাক্কালে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ তিনটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ পরীক্ষার্থী এবং ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্যরা আছেন।
আটকদের মধ্যে ১১জন পরীক্ষার্থী, এদের মধ্যে আটজন নারী। বাকিরা কলেজশিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত। আটক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, একটি অসাধু চক্র ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে এই জালিয়াতি কাজের সঙ্গে জড়িত। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগের রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের আটকের ফলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি। এই ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরীক্ষা বাতিল হবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের। তাছাড়া রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ডিবি কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান, ডিসি ক্রাইম আবু মারুফ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩-এর ১ম গ্রুপের (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ) আওতাধীন জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭।