শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত পান্না কায়সার

নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৬, ২০২৩, ০৩:০২ পিএম

ঢাকাঃ বিশিষ্ট লেখক ও সংগঠক শহীদজায়া পান্না কায়সারের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষেরা।

রোববার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় তার মরদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়। তখন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়িক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ বরেণ্য এ ব্যক্তিত্বের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

প্রথমে শ্রদ্ধা জানায় পান্না কায়সারর তৈরি শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’। পরে একে একে গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক কমিটি, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা থিয়েটার, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সংস্কৃতি মঞ্চ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদ, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, ছায়ানট, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমি, প্রজন্ম একাত্তরসহ আরও অসংখ্য সংগঠন ও ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা জানাতে এসে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক পুরোধা ব্যক্তিত্ব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার, অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। আমরা আশা করি, তার চাওয়া সেই বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।’

পান্না কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার বলেন, আমার মা কষ্ট থেকে শক্তি অর্জন করেছেন, কোনোদিন প্রকাশ করেননি। মাত্র ২১ বছরে তিনি বিধবা হন, তারপর এ বাংলাদেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি লড়াই করে গেছেন। এরই মধ্যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাসের বাইরে সঠিক ইতিহাস প্রচারে নিরন্তর লড়াই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন।

বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।

গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পান্না কায়সার। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী। পান্না কায়সার ১৯৫০ সালের ২৫ মে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

পান্না কায়সার দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯০-তে তিনি এই সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খেলাঘরের মাধ্যমে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’ এই স্লোগান সারাদেশের শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করতেও সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।

ঔপন্যাসিক ও গবেষক পান্না কায়সার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এই শহীদ জায়া শিক্ষকতা করেছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে।

তিনি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।

বুইউ