ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগে যারা মনে করত আমরা শুধু হাত পেতে চলব, এখন আর সেটা মনে করে না। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই, হাত পাতি না। তার সুদসহ ফেরত দিই। আগে ভাবনাটা এমন ছিল যে আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি। তবে পদ্মা সেতুর হওয়ার পর এখন আর কেউ এতো বেশি শর্ত দিতে সাহস পায় না, দেয় না।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে ‘প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট’- এর ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের একটা বদনাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আজ আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, এই একটা সিদ্ধান্ত আমি করি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি... আগে যারা মনে করতো আমরা শুধু হাত পাতি, এখন আর তা মনে করে না। বরং আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নেই, আমরা কারো কাছ থেকে হাত পেতে নেই না। আবার সুদসহ ফেরতও দেই। ভাবখানা এমন ছিল যেন আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি। পদ্মা সেতুর হওয়ার পর এখন আর কেউ এতো বেশি শর্ত দিতে সাহস পায় না, দেয় না।
বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার সাথে সাথে আমাদের প্রতিটি বাহিনীই সাধারণ মানুষের পাশে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮.৭ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের নিজেদের অর্থে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও মর্যাদা বহুলাংশে বেড়েছে।
একদিনে ১০০ সেতু এবং একদিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধনকে বিশ্বে বিরল উদাহরণ আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীনকে বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছি। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি।
সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই যেই দেশে আমাদের দেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছে, সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান যখন আমাদের বাহিনীর প্রশংসা করে তখন সত্যিই আমার গর্বে বুক ভরে যায়। এই যে আমরা সম্মান পাচ্ছি, সেটিকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করতে হয়েছে এরপর বাজারে দামের ঝাঁজ কমে এসেছে। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের দামও বেড়ে যায়, তখনও আমদানি করতে হয়েছিল। খাদ্য নিরাপত্তার পর এখন সরকারের লক্ষ্য খাদ্য সংরক্ষণ করা। যাতে কারও কাছে চাইতে না হয়।
বুইউ