হলি আর্টিসান হামলার ৭ বছর আজ

আগামী নিউজ ডেস্ক জুলাই ১, ২০২৩, ১২:৫৯ এএম

ঢাকাঃ রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার সাত বছর হলো আজ (১ জুলাই)। ২০১৬ সালের এইদিনে রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলা চালায় নব্য জেএমবির একটি সশস্ত্র দল। জঙ্গিদের হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্যসহ ২২ জন প্রাণ হারান। পরদিন ২ জুলাই সকালে অপারেশন থান্ডারবোল্ট নামে কমান্ডোদের এক অভিযানে পাঁচ জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে এক রেস্টুরেন্ট কর্মীর লাশ উদ্ধার ও পালিয়ে বের হয়ে আসার পর হাসপাতালে আরেক রেস্টুরেন্ট কর্মীর মৃত্যু হয়।

আলোচিত এই ঘটনাটি নিয়ে সে সময় দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ইউনিট একযোগে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গঠিত ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসির ধারাবাহিক অভিযানে গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া নব্য জেএমবির শীর্ষ একাধিক নেতা মারা যায়। গ্রেফতার করা হয় অনেক শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতাকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আলোচিত এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তার তদন্ত শেষ করে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি। অভিযোগপত্রে মোট ২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে অপারেশন থান্ডারবোল্ট ও অন্যান্য অপারেশনে অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন নিহত হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে থাকা আট জন হলো, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, হাদীসুর রহমান সাগর, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, মামুনুর রশিদ রিপন ও শরীফুল ইসলাম খালিদ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শেষে আলোচিত এই ঘটনার রায় হয় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায়ে ৮ জঙ্গির মধ্যে সাত জনের ফাঁসির আদেশ দেন। মিজানুর রহমান নামে এক জঙ্গির সম্পৃক্ততা আদালতের যুক্তিতর্কে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।

ডেথ রেফারেন্স শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে

আলোচিত এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিম্ন আদালতের রায়ের চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দোষীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানান, অধস্তন আদালতের রায়ের পর এর ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়েছে উচ্চ আদালতে। গত ১৪ মে উচ্চ আদালতে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ প্রথমে রায়ের অংশ পড়ে শোনান। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সর্বশেষ ১৪ জুন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। পরে দ্বিতীয় বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান হজ পালন করতে সৌদি আরব যান। আপাতত শুনানি থেমে আছে। নিয়মানুযায়ী তিনি দেশে ফিরে যোগদান করলে ওই বেঞ্চেই ফের আলোচিত এই মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হবে।

বুইউ