ঢাকাঃ কিছুদিন আগেও যারা আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘এবারও ঢাকায় শীত নেই’ তারাই বলছেন, ‘ঢাকায় এবার গ্রামের চেয়েও বেশি শীত পড়ছে।’
পৌষের মাঝামাঝি হঠাৎ শীত ও কুয়াশার দাপট বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামীসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে কথা হয় অফিসগামী আলাউদ্দিনের সঙ্গে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে তিনি যাচ্ছিলেন গুলশান-১।
তিনি বলেন, এবার ঢাকায় যে শীত পড়ছে গত কয়েক বছরে এমন হয়েছে কিনা সন্দেহ। মনে হচ্ছে গ্রামের থেকেও ঢাকায় বেশি শীত। কুয়াশা বাড়ায় গাড়ির সংখ্যা কমেছে। এতে চরম ভোগান্তি পড়েছি।
একই কথা বলেন, স্কুল শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলামের মা আনিকা তানজীব। তিনি বলেন, গত বছর শীত উপভোগ করতে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া গিয়েছিলাম। এবার মনে হচ্ছে না গ্রামে আর যাওয়া লাগবে। ঢাকার শীত গ্রামকে হার মানিয়েছে। উপরন্তু কুয়াশায় ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
রিকশাচালক আফসার উদ্দিন বলেন, গতকাল থেকে আজ বেশি শীত পড়ছে। ইচ্ছে না থাকলেও গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়েছে। কতো সময় গাড়ি চালাতে পারব না জানি না। বেশি কষ্ট হলে বাসায় চলে যাব।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা দেশে সর্বত্র সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, পুরো জানুয়ারি মাস জুড়ে শীত থাকবে। তবে তীব্র ঠান্ডা হয়তো আর দুই একদিন থাকবে।
এদিকে তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের স্বাভাবিক গতি ব্যহত হচ্ছে। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীরা। বিশেষ করে বাসে যাতায়াতকারীরা চালক-হেল্পারদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে যাচ্ছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি মাসে ২-৩টি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহও হতে পারে।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এসময় যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝ পদ্মায় আটকা পড়ে দু’টি ফেরি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ জানান, মধ্যরাত থেকে নদী এলাকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। পরে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘন কুয়াশায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। এসময়, মাঝনদীতে দু’টি ফেরি, পাটুরিয়া ঘাটে তিনটি এবং দৌলতদিয়া ঘাটে নয়টি ফেরি আটকা পড়ে।
বুইউ