ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠছে মধ্যরাতে, প্রস্তুত জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৮, ২০২২, ১০:৫৫ এএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ অপেক্ষা শেষ হচ্ছ জেলেদের। ইলিশের প্রজনন মৌসুমকে কেন্দ্র করে মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে। রাত ১২টার পর জেলেরা নির্বিঘ্নে আবারও ইলিশ শিকার করতে পারবেন। ইলিশ শিকারের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখন জেলেরা। তারা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে নৌপুলিশের আয়োজনে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শেষে গতকাল নৌ-পুলিশের প্রধান, অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের অভিযানে ১২৭ কোটি কারেন্ট জাল, সাড়ে ৪২ হাজার কেজি ইলিশ মাছ, ৪০০ মামলা ও সাড়ে ৪ হাজার অসাধু জেলেকে আটক করা হয়েছে। প্রত্যাশা করি এ বছর ইলিশের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। 

তবে এবারের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল তা নিয়ে কুয়াকাটার উপকূলীয় এলাকার জেলে ও ব্যবসায়ীদের আপত্তি ছিল। মৌসুমজুড়েই ছিল কুয়াকাটা ও মহিপুর উপকূলীয় এলাকার জেলেদের জালে ইলিশের আকাল। ধরা পড়া মাছের অধিকাংশই ছিল আকারে ছোট। বৈরি আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকবার বন্ধ ছিল মাছ ধরা। এরই মাঝে ২২ দিন বন্ধ রাখতে হয় ইলিশ ধরা।  

চট্টগ্রামের জেলে কাদের মিয়া জানান, আমাদের জেলেরা সবাই তাকিয়ে আছে কখন সাগরে যেতে পারব। অনেকদিন পর যাব সবাই খুব খুশিতে আছে, ভালো মাছ পাইলেই আরও আনন্দ। অনেক জেলে কিস্তি এবং ধার-দেনা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত। তবে মাছ ভালো পেলে এ সকল সমস্যা কেটে যাবে সে বিশ্বাসও আছে তাদের।

এদিকে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি অনুদান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক জেলে। বরিশাল, মাদারীপুর, পটুয়াখালী জেলার কয়েক জেলে সরকারি অনুদান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী পাড়ের জেলে পল্লিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজাপুর উপজেলার পুখরীজানা এলাকার এক জেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা ২৫ কেজি চাল পেয়েছি। এ ছাড়া অনেক অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে নেমে নির্বিচারে মা ইলিশ ধরেছে। এখন কেমন মাছ পাব জানি না।

এর আগে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

ওই ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকে। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণও এ সময় নিষিদ্ধ। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে এ সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয় বলে জানায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এমইউ