হাফেজ তাকরীমকে সংবর্ধনা দিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ০১:৫৯ পিএম

ঢাকাঃ সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত কিং আবদুল আজীজ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জনকারী বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে সংবর্ধনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনায় হাফেজ তাকরীমকে ২ লাখ টাকার চেক, সম্মাননা ক্রেস্ট ও বিভিন্ন উপহার দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মহা-পরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব আবদুল আউয়াল হাওলাদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমীন, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মিজানুর রহমান, তাকরীমের বাবা হাফেজ আবদুর রহমান, তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী ঢাকার মুহতামীম মুরতাজা হাসান ফয়েজী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, তাকরিমের অর্জন দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে এনেছে যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে দেশের অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য। বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরীমকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। পাশাপাশি তার বাবা-মা ও শিক্ষকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, পবিত্র কুরআনুল কারীম মানবজাতির হেদায়েতের নির্দেশনা। ইসলামের প্রসারে বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের অনুষ্ঠান থেকে আমি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বজয়ী হাফেজ ও কারীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমরা প্রতিযোগিতার জন্য বিভিন্ন দেশে ১১৮ জন হাফেজকে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে ৯৬ জন হাফেজ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন।

তাকরীমের বাবা হাফেজ আবদুর রহমান নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, তাকরীম আমার মেঝো ছেলে। সে বিশ্ব দরবারে বাংলার পতাকাকে উড্ডীন করেছেন। ওস্তাদদের পরিশ্রম ও ১৭ কোটি মানুষের দোয়ায় আমার ছেলে এই সফলতা অর্জন করেছে। আমি আমার ছেলের জন্য দোয়া চাই।

হাফেজ তাকরীমের শিক্ষক ও তার মাদরাসার মুহতামীম মুরতাজা হাসান ফয়েজী বলেন, এই সংবর্ধনার জন্য আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাকরীমের প্রথম শিক্ষক তার বাবা। তিনি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছেন এই সফলতায়। তিনি সঠিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক নির্বাচন করতে পেরেছিলেন।

মুরতাজা হাসান ফয়েজী আরও বলেন, তাকরীম বছরে মাত্র একবার বাড়িতে গিয়েছিল। সে তার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছিল। আমরা শুধু সংবর্ধনা চাই না। আমরা এই ছেলেগুলোকে আলেমে হক্কানি ও রাব্বানী বানাতে চাই।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাকরিমকে সংবর্ধনা দিতে। তাই আমরা আর দেরি করিনি। তাকরিমের সাফল্যে প্রধানমন্ত্রীও খুশি।’

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবে ৪২তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১১১টি দেশের ১৫৩ জন হাফেজের মধ্যে তার বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন হাফেজ তাকরিম। ২২ সেপ্টেম্বর রাতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ সময় তাকরিমকে এক লাখ রিয়াল পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

এর আগেও কুরআনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছিলেন তাকরিম। তিনি তেহরানের আন্দিশাহ (আল-ফিকির) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ৩৮তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর লিবিয়ায় আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় সপ্তম স্থান লাভ করেন।

হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিমের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তার বাবা হাফেজ আব্দুর রহমান একজন মাদরাসা শিক্ষক।

এমবুইউ