দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৫, ২০২২, ০৯:১৩ এএম

মাদারীপুরঃ বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আজ! দেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। যার হাতে ভিত্তিপ্রস্তর, তার হাতেই উদ্বোধন হবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পদ্মা সেতু, স্বপ্নের সেতু। 

এদিকে মাদরীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা সেতুর আদলে সাজানো হচ্ছে জনসভাস্থলের সভামঞ্চ। শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই অবসান ঘটবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার। উদ্বোধন হবে পুরো জাতির স্বপ্নের সেতু। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের মধ্যে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। সেতু উদ্বোধনের দিন দুপুরের দিকের সমাবেশেযোগ দিতে ভোর থেকেই হাজারো মানুষ ভিড় করছেন সমাবেশ এলাকায়। মিছিল নিয়ে দলে দলে মানুষ যোগ দিচ্ছেন সমাবেশস্থলে।

জানা গেছে, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী থেকে বাস ও লঞ্চযোগে জনসভাস্থলে আসছে মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পদ্মার পাড়। পরিবারসহ এসেছেন অনেকে। সমাবেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটতে পারে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ঘিরে জনসভায় আসতে শুরু করেছে পদ্মা পাড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলার লোকজন। জনস্রোতে পরিণত হচ্ছে পদ্মার পাড়। এদিন ভোর থেকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের অংশ ও বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে মিছিলে-স্লোগানে উজ্জীবিত নেতাকর্মীদের স্রোত জনসভাস্থলের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। লাল-সবুজ টি-শার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরে পায়ে হেঁটে বা পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও বাসে বিভিন্ন সড়ক ধরে যেভাবে পারছেন, ঘাটের দিকে আসছেন নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভিড়। লঞ্চ কিংবা নৌকায়ও ঠাঁই নেই তিল ধারণের।

জনসভায় যোগ দিতে আসা সজিব বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন। নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি। সকালেই চলে আসলাম। পরে ঢুকতে গেলে সমস্যা হতে পারে ভেবে আগেই চলে আসলাম।

পটুয়াখালী থেকে আসা নুরুল নামের আরেক কর্মী বলেন, ইতিহাস রচিত হচ্ছে আজ। এখানে ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি।

বরিশাল থেকে লঞ্চে করে এসেছেন আমিন মিয়া নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য খুশির খবর। এখানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে আসলাম।

জনসভাস্থলে কয়েকটি অস্থায়ী হাসপাতাল, সাড়ে পাঁচ শতাধিক শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। ওয়াচ টাওয়ার থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ব্যানার, পোস্টার আর বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার আর অলিগলি। বিভিন্ন সড়কের ডিভাইডার, জনসভাস্থলসহ দুই পাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাতে সাজানো হয়েছে।

এ জনসভায় ১০ লাখ মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ ‘পদ্মা সেতু’ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দিনকে বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। বিপুল সম্ভাবনাময় এই অঞ্চলের বহুমুখী উন্নয়নে এই সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে শিল্পায়ন ও পর্যটন শিল্পে অগ্রসর এ অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। টুঙ্গীপাড়াস্থ বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, সুন্দরবন এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ নানা প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাবে। নদী বিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ এবং দেশব্যাপী দ্রুত বাজারজাতকরণে পদ্মা সেতু বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

এমবুইউ