ঢাকাঃ ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় শনিবার থেকে লঞ্চ চালানো বন্ধ রেখেছেন মালিকরা। এই প্রেক্ষাপটে এসবের সমন্বয় নিয়ে আজ রোববার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ও লঞ্চ মালিকদের জরুরি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মতিঝিলের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান জানান। ‘বৈঠকে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান ছাড়াও মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও সচিবও থাকতে পারেন।’
এর আগে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোয় লঞ্চের ভাড়া বাড়াতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক সমিতি অন্যথায় নৌযান চলাচলও বন্ধ রাখবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সরকার তেলের দাম বাড়ানোর কারণে লঞ্চ ভাড়াও শতভাগ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।সমিতির পরিচালক মামুন অর রশীদ জানান, লঞ্চের ভাড়া দ্বিগুণ চেয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ভাড়ার ওপর ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ১ টাকা ৭০ পয়সার জায়গায় ৩ টাকা ৪০ পয়সা ও ১০০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে ১ টাকা ৪০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) সরকার ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়, যা ওই দিন রাত ১২টা থেকে কার্যকর হয়। এদিকে তেলের মূল্য কমানো বা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা এ ধর্মঘট শুরু করেছেন।
তেলের দাম বাড়ানোর পরদিন বৃহস্পতিবার এলপি গ্যাসের দামও বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
প্রতিদিন দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর লাখ লাখ মানুষ রাজধানীতে লঞ্চেই যাতায়াত করে থাকেন। লঞ্চ মালিকরা এমন সময় এ দাবি করলেন যখন সারা দেশে যাত্রী ও পণ্যপরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহনের ধর্মঘট চলছে।
এদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে রোববারও (৭ নভেম্বর) রাজধানী পালিত হচ্ছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট। ঢাকায় আজও চলাচল করছে না কোনো বাস। রাজধানী থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না আন্তজেলা ও দূরপাল্লার গণপরিবহন।
রোববার (৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীতে দেখা গেছে গণপরিবহনের তীব্র সংকট। সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, এলিফ্যান্ট রোড, কলাবাগান, ধানমন্ডি, আসাদগেট ও শ্যামলী এলাকায় কোনো যানবাহন দেখা যায়নি। তবে কিছু বিআরটিসি বাস চলতে দেখা গেছে।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রাজধানীর সড়কে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা। অফিসগামীরা বিকল্প এসব বাহনে যাতায়াত করেছেন। অনেকেই তিন থেকে চার গুণ বাড়তি ভাড়ায় এসব বাহনে করে কর্মস্থলসহ নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাচ্ছেন। বাড়তি ভাড়ার কারণে অনেকে হেঁটে যাতায়াত করেছেন।
আগামীনিউজ/বুরহান