প্রয়োজনে ভোট বন্ধ, প্রার্থিতা বাতিল করা হবে :সিইসি

ডেস্ক রিপোর্ট নভেম্বর ৪, ২০২১, ০৫:০৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সাহসী ভূমিকা পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।  তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি পরিবেশ ভালো না থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোট বন্ধ করা হবে।’ এছাড়া কোনও প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে দ্বিতীয় ধাপে ইউপি ভোট নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনা সভায় অনলাইনে অংশ নিয়ে এমন হুঁশিয়ারি দেন সিইসি। ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের পরিচালনায় অনলাইন সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.), সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করার কোনও অভিযোগ আসলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নেই। একঘণ্টাও আমরা বিলম্ব করি না। কোথাও অসুবিধা হলে সমস্যাগুলো আমাদের কাছে আসতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি মনে করে যে, সেই এলাকার নির্বাচনি পরিবেশ ভালো না। তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে  সেখানকার নির্বাচন বন্ধ করে দেবো। যদি কোনও প্রার্থীর আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হয়, তাহলে তদন্ত করে সত্যতা পেলে তার প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা আমাদের আছে।’

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক যারা আছেন, তারা পাশে থেকে সাহস যোগাবেন। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যাতে পাড় পেয়ে যেতে না পারে, সেই জন্য ব্যবস্থা নিতে উৎসাহ দিতে হবে। কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে, তারা আইনের আওতায় আসবে এবং এ জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।’ 

মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকে কোনও অভিযোগ আসলে আমরা তা ফাইল বন্দি করে রাখি না। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হবে। জাতীয় নির্বাচনের থেকে এই নির্বাচন আলাদা। এখানে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।’

যেকোনও প্রয়োজনে মাঠ কর্মকর্তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত হয়েছি যে, নির্বাচনি পরিস্থিতি সারাদেশেই ভালো হয়েছে। আটটি বিভাগের মধ্যে ঢাকা আর খুলনায় উত্তেজনা রয়েছে। খুলনা নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। ঢাকার ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকবো। কোন কোন পকেটে এই সমস্যা আছে, এখন থেকে যেন সেগুলো চিহ্নিত করতে পারি, সে ব্যাপারে তৎপর হতে হবে।’

মাঠ প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে অদ্ভুত ধরনের সমন্বয় রয়েছে। এটাই সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ট। আমি আশা করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে সিইসি বলেন, ‘কোথাও যদি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, কোনও কর্মকর্তা যদি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন, আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তাদের কোনও দল, মত, ব্যক্তি বিশেষের প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে না। নিরপক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে ভোটাররা যার যার ভোট দিয়ে চলে যাবেন, এই রকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রায় সকল দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অর্পিত থাকে। নির্বাচন কমিশনের হাতে প্রায় কিছুই থাকে না। সুতরাং, তারা দায়িত্ব পালনের জন্য যেকোনও ধরনের সাহায্য সহযোগিতা  কাছে চাইলে আমাদের কাছ থেকে পাবেন। তবে সব থেকে বেশি সহযোগিতা নিতে হবে মাঠপ্রশাসন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।’

মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে সিইসি আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচন সুষ্ঠু এবং ভালো প্রতিনিধি নির্বাচন করা আপনাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এসব প্রতিনিধি নিয়েই বিভিন্ন সময় আপনাদের সভা, সমাবেশ ও কাজ করতে হয়।’

আগামীনিউজ/নাসির