রামপাল (বাগেরহাট): র্যাব জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলা চত্তরে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) এর আয়োজনে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, র্যাব জনগনের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও দক্ষ নেতৃত্বে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখার জন্য এখানে র্যাবের একটি স্থায়ী ক্যাম্প তৈরী করার পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি আমরা কোষ্টগার্ডকে শক্তিশালী করছি। আমরা এখানে কাউকে ডাকাতি করতে দেবোনা। শুধু এখানেই নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষতা, প্রজ্ঞা দিকনির্দেশনা ও দূরদর্শিতায় চট্রগ্রাম সহ বিভিন্ন স্থানে জলদস্যুরা আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে বলে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সেই জায়গাটিতে আমরা যেতে পেরেছি। একটা পর্যায়ে আমরা বলতে পারি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় আত্মসমর্পনকৃত জলদস্যুদের ব্যাপারে খোজখবর নেন। আত্মসমর্পনের পর তাদের কথা ভেবেই তিনি নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। জলদস্যু যারা আত্মসমর্পন করেছেন তাদের র্যাব বাড়িঘর করে দিয়েছেন। পন্য সহকারে দোকান দিয়েছেন। ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়েছেন। ধর্ষন এবং খুন ছাড়া বাকী মামলাগুলোর ব্যাপারে আমাদের আগে যে সিদ্ধান্ত ছিল তাতে আমরা অটল আছি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ইউনাইটেড নেশন কিভাবে সম্মানিত করেছেন সেটাও আপনারা দেখেছেন। তিনি শুধু আমাদের নেতা নয়, আজকে তিনি সারা বিশ্বের নন্দিত নেতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সপ্ন ছিল একটি আসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ তৈরীর। আমরা দেখছি এই জায়গায় হিন্দুদের দূর্গাপুজোর সময় নানান ধরনের গুজব তৈরী করে, কেউবা নানান ধরনের প্রক্রিয়া তৈরী করে এখানে একটা বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় সেই আশাও তাদের পুরণ হয়নি। যারা চিন্তা করেন এই ধরনের একটা প্রক্রিয়া তৈরী করে, বিশৃঙ্খলা তৈরী করে সফল হবেন সেই আমায় গুড়েবালি। দেশকে নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেবোনা, আমরা এই শান্তির দেশকে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেবোনা।
আত্মসমর্পনকৃত জলদস্যুদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা আত্মসমর্পন করেছেন তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করবেন। আপনাদের জীবনযাত্রার জন্য যা যা প্রয়োজন আমাদের র্যাব তার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে। যারা আলাদা চিন্তা ভাবনা করবেন তাদের আবারও আইনের মুখোমুখি হতে হবে। সরকার আপনাদের পাশে আছে। র্যাব আপনাদের পাশে আছে। এই এলাকায় একটা শান্তির এলাকা তৈরী হবে। এই এলাকার সবাই মিলেমিশে থাকবে। এখানে একটা অসাম্প্রদয়িক চেতনার দেশ হবে। এখানে সবাই বিপদে একে অপরের পাশে দাড়াবে। একসাথে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।
এর আগে তিনি আত্মসমর্পনকৃত জলদস্যুদের মাঝে ১০২ টি ঘর, মালামালসহ ৯০ টি মুদি দোকান, ১২ টি জাল ও নৌকা, ৮ টি ইঞ্জিন চলিত নৌকা, ২২৮ টি গবাদিপশু বিতরণ করেন।
র্যাব এর মহাপরিচালক অতিঃ আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পুলিশের মহাপরিচালক ড. বেনজির আহমেদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, এমপি গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার, খুলনা ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমপি মোঃ শামসুল হক টুকু, খুলনা সিটি কর্পোরেশন মেয়র তালুকদার আঃ খালেক, র্যাব এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল কে এম আজাদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমপি পীর ফজলুর রহমান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন, রেঞ্জ ডিআইজি, র্যাব-৬ অধিনায়ক লে. কর্নেল মোঃ মোস্তাক আহমেদ, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আজিজুর রহমান, বাগেরহাট পুলিশ সুপার মোঃ আরিফুল হক, রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কবীর হোসেন সহ র্যাব ও সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের কর্মকতাবৃন্দ।
আগামীনিউজ/ হাসান