রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের চুল্লির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট অক্টোবর ১০, ২০২১, ০১:২৯ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবনার ইশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল যন্ত্র পারমাণবিক চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল-আরএনপিপি) স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেছেন। রোববার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবর, প্রকল্পের ঠিকাদার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটমের অন্যতম প্রধান নির্বাহী এলেক্সে লিখাচেভ, স্থানীয় এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাসসহ রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, রূপপুর কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য এ রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেলটি রাশিয়া থেকে জলপথে ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গত বছরের অক্টোবরে দেশে পৌঁছে। সেটি স্থাপনের জন্য এক বছর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়। রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে মূল জ্বালানি থাকে। এখান থেকেই বিদ্যুৎ সাপ্লাই হয়।

রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটম জানায়, পারমাণবিক চুল্লিটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন। এ চুল্লি কৃষ্ণ সাগর ও সুয়েজ খাল পাড়ি দিয়ে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছে। সেখান থেকে নৌপথে ঈশ্বরদীর পাকশীর পদ্মা নদী হয়ে রূপপুরে আনা হয়।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে। ২০১০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট হয়। একই বছর জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ২০১২ সালে বাংলাদেশ অ্যাটোমিক অ্যানার্জি রেগুলেটরি অ্যাক্ট পাস হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ধাপে ধাপে প্রকল্পটি এখন আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে রুশ নকশায় রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ভিভিআর-প্রযুক্তির রিঅ্যাক্টরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। শিডিউল অনুসারে ২০২৩ সালে ইউনিট-১ ও ২০২৪ সালের ইউনিট-২ চালুর কথা রয়েছে।

২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটম রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের প্রাথমিক চুক্তিটি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে স্বাক্ষরিত হয়।

আগামীনিউজ/বুরহান